অলোক সাঁতরা, মেদিনীপুর: কলকাতার পর মেদিনীপুর। এবার ভুয়া আইপিএস অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও তোলাবাজির অভিযোগ গ্রেফতার করা হলো মেদিনীপুর শহরের এক যুবককে। 


নীলবাতি লাগানো গাড়িতে ঘোরা। সোশাল সাইটে আইপিএস অফিসারের পোশাকে একাধিক পোস্ট। আচার-আচরণে সন্দেহের কোনও জায়গা ছিল না। তা সত্ত্বেও হল না শেষরক্ষা।


বেলঘরিয়ার রাজর্ষি ভট্টাচার্যের পর এবার পুলিশের জালে মেদিনীপুরের লাইব্রেরি রোডের বাসিন্দা সৌমকান্তি মুখোপাধ্যায়। আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন আরও এক ভুয়ো আইপিএস অফিসার। 


ধৃত ভুয়ো আইপিএস অফিসারের নাম সৌম্যকান্তি মুখোপাধ্যায়। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে আইপিএস ব্যাজ, টুপি, আইডি-সহ রিভলভার রাখার হোল্ডার।


মেদিনীপুররে বাসিন্দা তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় কোতয়ালি থানায় অভিযোগ জানান বুধবার রাতে। তাঁর অভিযোগ, সাড়ে দশ লক্ষ টাকা নিয়ে ফেরত দিচ্ছিলেন না তাঁরই এক আত্মীয় ও সহ দুজন।


টাকা উদ্ধারে রাস্তা খুঁজতে গিয়ে খোঁজ মেলে সৌমকান্তি মুখোপাধ্যায়ের। আইপিএস পরিচয় দিয়ে, টাকা উদ্ধারের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি ৭০ হাজার টাকা নিলেও মূল টাকা ফেরত দেননি।


এদিকে, পুলিশের কাছে বেশ কিছুদিন যাবৎ খবর আসছিল যে, মেদিনীপুর শহরের লাইব্রেরি রোড এলাকার বাসিন্দা এই যুবককে বিভিন্ন সময় নীলবাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। 


স্থানীয়দের দাবি, নিজের এমন বহু ছবি সোশ্যাল মাধ্যমেও রেখেছেন ওই যুবক। নিজেকে আইপিএস অফিসার পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি। 


এমনকী, বহু লোকের কাছে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ এসেছে তার নামে। সম্প্রতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে টাকা তোলার পরে পুলিশের নজরে আসেন সৌম্যকান্তি।


কোতোয়ালি থানার পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করে বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। 


পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, আইপিএস অফিসার হিসেবে তৈরি করার জন্য একাধিকবার ইউপিএসসি সহ বিভিন্ন পরীক্ষায় বসেছিলেন ওই যুবক। সেখানে ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এরপর কম সময়ে টাকা রোজগার করতে এই পথ অবলম্বন করেন। 


ধৃত যুবককে মেদিনীপুর আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।