সোমনাথ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর : ২০০৮ সালে অস্কার পেয়েছিল ডক্যুমেন্টারি স্মাইল পিঙ্কি। বারাণসীর কাছের একটি গ্রামের এক গরিব পরিবারে কাটা ঠোঁট নিয়ে জন্মেছিল পিঙ্কি। সারা গ্রামে তার কোণঠাসা হয়ে পড়া, স্কুলে যেতে না পারা, হতাশার জীবন কাটানোর ভয়াবহ এক ছবি উঠে এসেছিল ওই আমেরিকান তথ্যচিত্রে। সেই ছবি দেখিয়েছিল সমস্যা থেকে উত্তরণের পথও। কিন্তু আজও 'পিঙ্কি'র মতো অনেক মেয়েরা হতভাগ্যই। প্রমাণ করল ঘাটালের এক ঘটনা।

ঘরে আছে আরও দুই মেয়ে। তারপর কোলে এল আরেক মেয়ে। তার আবার ঠোঁটের উপরের অংশ কাটা।  সে ভালভাবে খেতে পারে না মায়ের বুকের দুধও। আর তাই নিয়েই গরির রাজমিস্ত্রির পরিবারে তীব্র অশান্তি। একে দুই মেয়ের পর আরও এক মেয়ে, তাও আবার ঠোঁট কাটা, তাই বাবা-মা সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েকে নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়ার। যেমন ভাবা , তেমন কাজ। দুই মাসের কন্যাসন্তানকে ঝুমি নদীতে ফেলে দিল  বাবা। 

 ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাল থানার অন্তর্গত মনসুকা দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে  রামচক গ্রামে।  গত মঙ্গলবার ওই গ্রামের  এক ব্যাক্তি তার তৃতীয় কন্যা সন্তানকে ঝুমি নদীর জলে ফেলে দেয়। তারপর মঙ্গল পেরিয়ে শুক্র। জানাজানি হত না, যদি না আইসিডিএস কর্মীরা খোকন হাজরার বাড়িতে হাজির হতেন ওই শিশুকে দেখতে । সেখানে গিয়ে দু-মাসের কন্যাসন্তানকে দেখতে চান তাঁরা। শিশুর খোঁজ না পেয়ে তৎক্ষণাৎ আইসিডিএস কর্মীরা গ্রাম পঞ্চাতের প্রধান কে জানান।  তারপরই খবর দেওয়া হয় পুলিশে।


 গ্রামীন পুলিশ খবর দেয় ঘাটাল থানায় । কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘাটাল থানার ওসি শঙ্খ চট্টোপাধ্যায় পৌঁছান ওই এলাকায়। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে আটক করে ওই শিশুর বাবা ও মাকে। স্থানীয়রাই জানান, পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে শিশুটির বাবা। পুলিশ সূত্রে খবর,  বাচ্চার বাবাই আটক হওয়ার পর পুলিশের কাছে জানায়, জন্মের পর থেকেই ঠোঁটের ওপর দিকটি কাটা ছিল শিশুটির। তার ফলে স্তন্যপান করতে পারছিল না সে। সেইসব নিয়ে বাড়িতে নানান রকম অশান্তি শুরু হয়। সেই কারণেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করে সে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রিয়া রায় বলেন, এটি একটি ন্দনীয় ঘটনা এদের অবিলম্বে শাস্তি দেওয়া হোক। 


আরও পড়ুন :              


ভারতীয় জাদুঘর বোমায় উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি