কলকাতা: রেশন দুর্নীতিতে (Ration Scam) জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mallick) বিরুদ্ধে এনফোর্সেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) হাতিয়ার দু'টি মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। জ্যোতিপ্রিয়-ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানের দুই কর্মীর মোবাইল ফোন বাতিল করেছে ED. তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকেই বিস্ফোরক তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। সেখানে লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য মিলেছে বলে জানা যাচ্ছে। 


ED সূত্রে খবর, ওই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি লেখা হয়, 'এমআইসি-কে পেমেন্ট হয়ে গিয়েছে। টাকার অঙ্ক ছিল ৬৮ লক্ষ টাকা'। দ্বিতীয় ফোন থেকে পাঠানো বার্তায় লেখা হয়, 'এমআইসি-পেমেন্ট করা হয়েছে ১২ লক্ষ টাকা'। এমআইসি অর্থাৎ মিনিস্টার ইন চার্জের কথা বলা হয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে ED-র কাছে স্বীকার করেছেন বাকিবুরের দুই কর্মী। তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র কথাই বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।


ঋণবাবদ জ্যোতিপ্রিয় ওই ৮০ লক্ষ টাকা নেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বাকিবুরও। ED-র দাবি, এই উপায়েই জ্যোতিপ্রিয়র কাছে রেশন দুর্নীতির টাকা যায়। ED-র দাবি, ২০১৬ সালে জ্যোতিপ্রিয়ের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে নগদে ৬ কোটির বেশি টাকা জমা পড়ে। মেয়ের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ৩ কোটি ৮০ লক্ষের বেশি টাকা।


আরও পড়ুন: TMC: দেড় বছরে গ্রেফতার TMC-র ২ হেভিওয়েট মন্ত্রী, ২ বিধায়ক-সহ জেলবন্দি অনুব্রতও; শাসকের বাড়ছে অস্বস্তি


ভুয়ো সংস্থার মাধ্য়মে রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয় বলেও আদালতে উল্লেখ করেছে ED. তাদের দাবি, তিনটি ভুয়ো সংস্থার মাধ্যনে কালো টাকা সাদা করা হয়। ২০০৮ সালে ওই তিন সংস্থা খোলা হয়, তাদের ঠিকানাও এক। তিনটি সংস্থার অংশীদার হিসেবে নাম ছিল বাকিবুরের আত্মীয় অভিষেক বিশ্বাসের। এর মধ্যে জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে তল্লাশির সময় দু'টি সংস্থার রবার স্ট্যাম্প উদ্ধার হয়। ওই রবার স্ট্যাম্পগুলি ছিল এজে অ্যাগ্রোটেক এবং এজে রয়্যাল নামের দুই সংস্থার।


আদাতলতে ED জানিয়েছে, এজে অ্যাগ্রোটেক এবং এজে রয়্যাল সংস্থার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করেছেন বাকিবুরের আত্মীয় অভিষেক। ওই দু'টি সংস্থাই যে ভুয়ো, তা দুই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন বলে দাবি ED-র। এ ছাড়াও, জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্ত সহায়ক অমিত দে-র ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শনিবার সকালেও সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন অমিত। ২০১১ থেকে জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্ত সহায়ক তিনি। অমিতের নামে এবং বেনামেও প্রচুর সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, রিসর্টেরও হদিশ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি ED-র। রেশন দুর্নীতির টাকাও অমিতের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে বলে দাবি তাদের।