কলকাতা: আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সরাসরি ভারে আঘাত হানবে না এটি। আছড়ে পড়বে বাংলাদেশে। কিন্তু তার প্রভাব থেকে নিস্তার পাবে না ভারত। পশ্চিমবঙ্গের উপকূল এলাকায় ভালমতো প্রভাব পড়বে। ঝোড়ো হাওয়া, ভারী-অতিভারী বৃষ্টির সঙ্গে সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও রয়েছে। একাধিক উপকূলীয় জেলায় নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে। ফ্লাড সেন্টার, সাইক্লোন রিলিফ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের।


এসবের মাঝেই একটা বিষয় বারবার আলোচনায় উঠে আসছে। ঘূর্ণিঝড়ের এমন নাম কেন? কে দিল এই নাম? নামের মানেই বা কী?


সিত্রাং-কথা:
Sitrang আদতে এই তাই-নাম। অর্থাৎ এই নামের উৎস তাইল্যান্ড। সি-ত্রাং (Si Trang), এভাবেই সেদেশে উচ্চারিত হয় এটি। সূত্রের খবর, এটি তাইল্যান্ডের কোনও পদবী।


কীভাবে দেওয়া হয় নাম:
ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশ, আরব সাগরের একটি বড় অংশে, বঙ্গোপসাগরে কোনও ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি শুরু হলে তার দিকে কড়া নজর রাখে ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (India Meteorological Department)। এই ঘূর্ণিঝড়গুলির নামকরণ করা হয়। আবহাওয়া দফতরগুলির একটি মঞ্চ থেকে নাম ঠিক করা হয়। সেই মঞ্চে রয়েছে- ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, পাকিস্তান, মলদ্বীপ, ওমান, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইয়েমেন। এই ১৩টি দেশ মিলে এখনও পর্যন্ত ১৩টি করে ঝড়ের নাম দিয়েছে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১৬৯। সেই তালিকা থেকেই নেওয়া হয় নাম। ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়গুলির নাম ঠিক করার জন্য ২০০০ সালে ওমানের মাস্কটে World Meteorological Organisation-এর অধিবেশনে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ-সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখনই সবকটি দেশ মিলে একটি তালিকা দিয়েছিল। সেখান থেকেই পাওয়া যায় ঝড়ের নাম। আয়লা, আমপান, বুলবুল, হুদহুদ, ফণী, অশনি---এই সবকটি নামই এমন ভাবে এসেছে। কোন বছরে কত নম্বর ঘূর্ণিঝড়ের কী নাম হবে তা ইতিমধ্যেই তৈরি।  


কেন দেওয়া হয় নাম:
World Meteorological Organisation-এর মতে একই সঙ্গে একটি জায়গায় একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হতে পারে। তাই চেনার জন্য এবং নজর রাখার সুবিধার জন্য নামকরণ প্রয়োজন। এর মাধ্যমে লাগোয়া এলাকাকে সতর্ক করা যায়। সমুদ্রে থাকা জাহাজগুলিকে বার্তা পাঠানো যায়। 


এখন কোথায় সিত্রাং:
সোমবার দুপুর তিনটে পর্যন্ত পাওয়া খবরের ভিত্তিতে। সাগর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সমুদ্রের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে উপকূলের দিকে। ক্রমশ বাড়ছে হাওয়ার বেগ, বাড়ছে দুর্যোগ-শঙ্কা। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আগামী ১২ ঘণ্টায় সিত্রাং শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। মধ্যরাত থেকে ভোররাত পর্যন্ত দুই ২৪ পরগনায় বইবে ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড়। প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষতি হতে পারে কাঁচা বাড়ির
ঝোড়ো হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পাকা রাস্তারও। তবে বিপদ নেই কলকাতার। জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।


আরও পড়ুন: হু হু করে বইছে হাওয়া, দুর্যোগ বাড়ছে দিঘায়, ফিরবে কি আম্ফান, ইয়াসের স্মৃতি?