অনির্বাণ বিশ্বাস ও দীপক ঘোষ, কলকাতা: বালিগঞ্জে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে শুরু হওয়া, জগদ্ধাত্রী পুজোয় দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব। পুজোর সভাপতি কে? স্থানীয় কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়? না বালিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিল? এই প্রশ্ন ঘিরে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। এরইমধ্যে মণ্ডপ তৈরি স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই আলোর রোশনাই কিন্তু, বালিগঞ্জের এই পুজো মণ্ডপ জুড়ে শুধুই আঁধার। বাঁশের কাঠামোয় পড়েনি কাপড়ের আচ্ছাদন, অসম্পূর্ণ মণ্ডপ। এরইমধ্যে রাখা, জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের বালিগঞ্জের এই পুজো ঘিরে বেঁধেছে বিতর্ক। আমরা-ওরা তরজা। পুজোর উদ্যোক্তা কারা? তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই পুজোর সূত্রপাত, প্রয়াত তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে। গতবছর তাঁর মৃত্যুর পর, এবার পুজোর আয়োজকদের মধ্যেই বেঁধেছে বিবাদ! উদ্যোক্তাদের একাংশের দাবি, এই পুজোর সভাপতিত্ব করার জন্য এবছর আহ্বান জানানো হয়েছিল, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কে। এরইমধ্যে, মণ্ডপের অদূরে দেখা যায় একটি ফ্লেক্স। যেখানে, সভাপতি হিসেবে, নাম রয়েছে, বালিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়র।
আর, উপদেষ্টা হিসেবে নাম রয়েছে, রাসবিহারীর তৃণমূল বিধায়ক, দেবাশিস কুমারের। পুজো কমিটির সদস্য গীতা হাকিম জানিয়েছেন, আমরাই সবাই মিলে এখানে পুজোটা করি মহিলারা মিলে। আমরা সবাই মিলে উনাকে অনুরোধ করেছিলাম সভাপতি হওয়ার জন্য। সুদর্শনাদিকে। উনি তাতে সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু অন্য আর একজন কারা এসে ওখানে হোডিংটা লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছে আমরা জানিনা। ওই হোডিংটা কে লাগিয়েছে আমরা জানি না। কে লাগিয়েছে কারা লাগিয়েছে আমরা কিছুই জানি না।
রাসবিহারীর তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমারের কথা, যারা বাবুল সুপ্রিয়কে সভাপতি করেছেন। তারা যখন করেছেন তাদের নিশ্চয় কোন কারণ আছে বা তাদেরকে কেউ বলেছে করার জন্য। সেই জন্য আমার মনে হয় আমার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গা। আমার যেটা খারাপ লেগেছে যেটা আমি শুনলাম অনুমতি ছাড়া প্রতিমা নিয়ে এসে রাস্তায় বসিয়ে দেওয়া এটা বোধহয় আমার নিজের একটু খারাপ লেগেছে। তার কারণ আমি ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ। আমার কাছে মূর্তিটা মায়ের মত। সেটা আমার আবেগকে আঘাত করে।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, টিম ইলেভেনের প্লেয়ার আছে। ভালো থাকুন। উনি কচু খেয়েছেন। আগে তেঁতুল গাছের খোঁজ নিয়ে কাখলে ভালো হত। দোলাচলের মধ্যেই, আপাতত প্যাণ্ডেল তৈরির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
পুজো কমিটির সদস্য মধুয়া সেন বলছেন, পুলিশের তরফে সেরকম কিছুই বলা হচ্ছে না আমাদের প্যান্ডেল অনেকদিন শুরু হয়েছে। আজকে বিকেল বেলায় ওনারা হঠাৎ করে এসে বলেছেন কাজটা স্থগিত রাখতে বন্ধ রাখতে। পুলিশের তরফে এসে আমাদের ভাইয়েরা সবাই এখানেই ছিল আমরা বাড়িতে ছিলাম পরে ফোনে জানতে পারলাম পুলিশ এসে এরকম করে হঠাৎ করে বারণ করে দিয়েছে প্যান্ডেলটা আর যাতে না করা হয়। বুধবার জগদ্ধাত্রী পুজোর নবমী। সাধারণত, সেদিনই জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয় মাতৃ আরাধনা। মাঝে আর একটা দিন। তার মধ্যে কি বিবাদ মিটবে? সেটাই এখন দেখার।