কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হল। রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকেই। সবই তো হ, তবে এখন প্রশ্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের একাংশ তো বটেই, সাধারণ মানুষের মনেও একই প্রশ্ন। এবারেও কি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই ভোট করানো হবে? নাকি আস্থা রাখা হবে রাজ্য পুলিশের ওপরেই?


দিন ঘোষণা হয়ে গেল পঞ্চায়েতের মেগা ফাইটের! ৮ জুলাই হতে চলেছে গ্রাম বাংলার হাইভোল্টেজ ভোট-যুদ্ধ!২০১৮-র মতো এবারও গোটা রাজ্য়ে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে এক দফাতেই। আর এই ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ২০১৮-র মতো এবারের পঞ্চায়েত ভোটও কি হবে রাজ্য় পুলিশ দিয়েই? নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইবেন নতুন রাজ্য় নির্বাচন কমিশন রাজীব সিন্হা? ২০১৮-র মতো এবারও কি পঞ্চায়েত ভোটে ফিরবে হিংসার ছবি? বিনা বাধায় কি মনোনয়ন দিতে পারবে বিরোধীরা?নির্বিঘ্নে কি গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন ভোটাররা? 


কিন্তু, বৃহস্পতিবার এর মধ্য়ে কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দেননি রাজীব সিন্হা। গতবার পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল রাজ্য় পুলিশ দিয়ে। আর সেবার মনোনয়ন পর্ব থেকে ভোট অবধি লাগামছাড়া হিংসার সাক্ষী ছিল গোটা বাংলা! খুন, রক্তপাত, সংঘর্ষ কিছুই বাদ যায়নি! এবারও রাজ্য় পুলিশ দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট হলে, তা কতটা শান্তিপূর্ণ হবে, সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। রাজ্য় নির্বাচন কমিশনার এনিয়ে সরাসরি উত্তর না দিলেও, ইঙ্গিতপূর্ণভাবে পুলিশে আস্থা রাখার কথা শোনা গেছে তাঁর মুখে। 


বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে যদিও রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা রাখার কথাই বারবার বলেছেন সদ্য পদ পাওয়া কমিশনার রাজীব সিনহা। যদিও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তের কথা বলেলনি তিনি। পূর্বের ইতিহাস বলছে পঞ্চায়েত ভোটে একাধিক উত্তেজনার সাক্ষী থেকেছে বাংলা। তাহলে এবারেও কি কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন হবে? 


এদিন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নির্বাচনের দিন ঘোষণার অনেক আগে থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে বোমা বা আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। তার ফলে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে যে, হিংসা হতে পারে। রাজ্য় পুলিশের ওপর ভরসা তারা রাখতে পারছে না। 


এ প্রসঙ্গে রাজীব সিন্হা বলেন রাজ্য় পুলিশের ওপরে ভরসা রাখা উচিত। কারণ, রাজ্য় সরকারের যে আধিকারিকরা রয়েছেন, তাঁরাই আমাদের সঙ্গে থাকেন। রাজ্য় নির্বাচন ক্ষেত্রে রাজ্য়ের যে আধিকারিকরা রয়েছেন, পুলিশকর্মী হোক, সাধারণ কর্মী হোক, তাঁদের ওপর তো আমাদের আস্থা রাখতেই হবে।


এ প্রসঙ্গে 'বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থা'-র কথাও বলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ পরিস্থিতি দেখে এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই ইঙ্গিত। 


গতবার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বেই, বিভিন্ন জায়গা থেকে সামনে এসেছিল হিংসার ছবি। শেষমেশ আদালতের নির্দেশে, হোয়াটসঅ্য়াপে দেওয়া মনোনয়নও গ্রাহ্য় হয়েছিল। এবারও কি অনলাইনে মনোনয়ন নেওয়া হবে? তা নিয়েও খোলসা করে কিছু বলেননি রাজীব সিন্হা। গত বছর নমিনেশনের ক্ষেত্রে গতবার দেখা গিয়েছিল, অনেকে নমিনেশন দিতে পারেনি, সিকিওরিটির কারণে, শেষ পর্যন্ত হোয়াটসঅ্য়াপেও নমিনেশন  নেওয়া হয়েছিল। এবার কি নজরে থাকছে সেই বিষয়টা? 


উত্তরে রাজ্য় নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা বলেন, 'ঠিক আছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্য়বস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেরকম বিশেষ পরিস্থিতি যে এবার আসে, তখন আমরা ভাবব।'