সন্দীপ সরকার, আশাবুল হোসেন ও সনৎ ঝা, কলকাতা: এক দিকে, পৃথক উত্তরবঙ্গের পক্ষে সওয়াল (Separate Nort Bengal Demand)। অন্য দিকে, রাজ্যে সংশোধিকত নাগরিকত্ব (CAA) আইন কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) সফরে জোরাল হল 'বঙ্গভঙ্গ'-এর সপক্ষে দাবি। একবার, দু'বার নয়, বৃহস্পতিবার দিনভর বাংলা থেকে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করে, পৃথক রাজ্যের দাবি উঠল দফায় দফায়। তা নিয়ে শাহকে তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banejee)। 


অমিত শাহের সভাতেই পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি


গণমাধ্যম বা সমাজমাধ্যমে নয়, উত্তরবঙ্গে শাহের সভামঞ্চে দাঁড়িয়েই দফায় দফায় পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি তুলতে দেখা গেল উত্তরবঙ্গের একের পর এক বিজেপি বিধায়ককে। এ দিন মাটিগড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, "উত্তরবঙ্গে এত বঞ্চনা, এত শোষণ। আর তার কারণ কিন্তু, উত্তরবঙ্গ আলাদা হওয়ার জন্য জনগণের মধ্যে থেকে দাবি এসেছে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের জন্য কাশ্মীরের থেকে লাদাখ যদি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হতে পারে, আজ তাহলে পশ্চিমবঙ্গে থেকেও এই বঞ্চনার জবাব দেওয়ার জন্য উত্তরবঙ্গের জন্য মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিতভাবে ভাবনাচিন্তা করবেন।"


ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় বলেন, "উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য আলাদা ব্যবস্থা হোক, বিশেষ করে চাইছি। আগামী দিনে আমরা সেভাবে তৈরি হতে চাই। উত্তরবঙ্গের মানুষ উত্তরবঙ্গ শাসন করুক।"



আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari:'বাংলার সংবিধানের সব স্তম্ভ ভেঙে দিয়েছে রাজ্য সরকার', অভিযোগ শুভেন্দুর।Bangla News


গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি তুলছেন বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা। সেই তালিকায় রয়েছেন আনন্দময়, শিখা এবং জন বার্লারা। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র পরাজয়ের পর ফের শাহ যখন রাজ্যে এলেন, নতুন করে সেই দাবি জোর পেতে শুরু করেছে।


আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই একই মঞ্চ থেকে কার্যত এই দাবির পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, "অনেকে বলছেন আমরা আলাদা হতে চাই। এই অত্যাচার থেকে, অপমান থেকে, শোষণ থেকে আলাদা হওয়ার যেহেতু দাবি উঠেছে, এই কথা বললেই তৃণমূল এবং তার চামচারা বলছে রাজ্যভাগ করতে চাইছে। সেই অধিকারের জন্য বারবার উত্তরবঙ্গের মানুষ দাবি করেছেন, আওয়াজ তুলেছেন। আমি আপনাদের সঙ্গে একমত।"


শাহকে তীব্র কটাক্ষ মমতার


উত্তরবঙ্গকে আলাদা করার এই দাবির তীব্র নিন্দা করেছেন মমতা। এ দিন দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকের পর তিনি বলেন, "ওদের কাজই ভেঙে ফেলা, আলাদা করা। হিন্দু-মুসলিম ডিভোর্স করাতে চায়। বাংলার সঙ্গে রাজবংশীদের ডিভোর্স করতে চায়।" তবে শাহের সফর চলাকালীন 'বঙ্গভঙ্গ'-এর এই দাবি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে বিজেপি এই ইস্যু নিয়েই মাঠে নামতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।