কলকাতা: ক্রিসমাস উপলক্ষে সেজে উঠেছে তিলোত্তমা। পার্ক স্ট্রিট থেকে বো-ব্যারাক আলোর মালায় সেজেছে শহরের একাধিক প্রান্ত। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ (কলকাতা) অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (SXCCAA) বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে একাধিক জনহিতকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জেভিয়ার্স প্রাক্তনীরা 'Men and Women for and with Others' এই চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে, ১৫ থেকে ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত তাদের বড়দিনের জনসেবামূলক কর্মসূচি ‘লেটস শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ চালু করেছে। 

Continues below advertisement

এই উদ্যোগের মাধ্যমে কলকাতা এবং গ্রামীণ পশ্চিমবঙ্গের ২,০০০-এরও বেশি শিশু, বৃদ্ধাশ্রমের প্রবীণ বাসিন্দা এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ের জীবনে বড়দিনের আনন্দ ভাগ করে নিতে পেরেছে। এই উদ্যোগটি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ (স্বায়ত্তশাসিত), কলকাতার অধ্যক্ষ এবং SXCCAA-এর সভাপতি রেভারেন্ড ডঃ ডমিনিক স্যাভিও, SJ- যোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি ও নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

Continues below advertisement

১৮ ডিসেম্বর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে কলেজ ক্রিসমাস মিটের মাধ্যমে উদযাপন শুরু হয়। রেভারেন্ড ডঃ ডমিনিক স্যাভিও, বড়দিন উপলক্ষে গোশালা উদ্বোধন করেন এবং কলকাতা থেকে মানববিকাশ কেন্দ্র, সোনারপুর থেকে আনন্দঘর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দেবীপুর গ্রামের স্কুলে ৫০ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর উপস্থিতিতে এই উৎসবের চেতনা উদযাপন করেন এবং তাদের হাতে বড়দিনের উপহার তুলে দেন।

এই জনসেবামূলক কাজ ২০ ডিসেম্বর শুরু হয়। সকালে প্রিন্সিপল লিটল সিস্টার্স অফ দ্য পুওর- পরিচালিত কলকাতার সেন্ট জোসেফ ওল্ড-এজ হোম পরিদর্শন করেন। SXCCAA উইমেনস ফোরামের সদস্যরা সঙ্গীত, ক্যারল, কেক কাটা এবং সৌহার্দ্য বিনিময়ের মাধ্যমে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে একটি দিন কাটান এবং বাড়ি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও আর্থিক অনুদানও হস্তান্তর করেন।

SXCCAA ফিলানথ্রপি টিমের প্রধান উদ্যোগটি ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। যখন জেসুইট ফাদার, অ্যালামনাই সদস্য এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি দল, SXCCAA-এর অনারারি সেক্রেটারি সঞ্জীব কোনেরের পরিকল্পনা এবং রেভারেন্ড ডঃ ডমিনিক স্যাভিও, SJ-এর চিন্তাভাবনায় পাইখালা প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের রাঘবপুর ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে। দলটি দেবীপুর, শালপুকুর, মাগুরখালি এবং বাকেশ্বর সহ আশেপাশের ৬-৭টি গ্রামের শিশু ও বয়স্ক বাসিন্দাদের মধ্যে গুডি ব্যাগ, উপহার, স্টেশনারি, চকোলেট, কেক, সোয়েটার, হুডি, কম্বল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করেছে।

এও জানান হয়েছে, সেখানে প্রয়োজনীয় সামগ্রীও পাঠানো হচ্ছে এবং ক্যাম্পাসে ফাদার প্রিন্সিপাল, ফাদার ভাইস প্রিন্সিপাল, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পদাধিকারী, ফিলানথ্রপি কনভেনর এবং এসএক্সসিসিএএ-এর সদস্যদের উপস্থিতিতে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

“Nihil Ultra” অর্থাৎ এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ আর কিছু নেই—এই জেভিয়ারিয়ান চেতনাকে ফুটিয়ে তোলে। এই উদ্যোগটি এই বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে যে এই ধরনের কাজ একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। "লেটস শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার"-এর মাধ্যমে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিটি অংশীদারকে একজন সিক্রেট সান্তা হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। 

বড়দিন যেন সকলের হয়ে ওঠে সেই চেষ্টাই করে চলেছে এই প্রাক্তনী সংগঠন। মাদার টেরেসার কালজয়ী বাণীকেই পাথেয় করেই এগিয়ে চলেছে এই কাজ। যেখানে মাদার বলেছেন, "আপনি কতটা করেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আপনি যা করেন সেখানে কতটা ভালোবাসা থাকে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ"।