অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: আইআইটি খড়গপুরে (IIT Kharagpur)চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার (fraud) অভিযোগে গ্রেফতার (arrest) আলিপুরদুয়ারের (alipurduar) যুবক। ধৃতের নাম ভিকি হাজারি। বয়স তিরিশ বছর। আদালতে হাজিরার পর তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে খড়গপুর নিয়ে যায় সেখানকার পুলিশ।
অভিযুক্তের পরিচয়...
পুলিশ সূত্রে খবর, ভিকি হাজারি আদতে শামুকতলা থানার শিবকাটা গ্রামের বাসিন্দা। খড়্গপুরের একটি হোটেসে বসে আইআইটি-র হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর বিরুদ্ধে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রুজু হয়েছে হালেই। একই অভিযোগ রয়েছে প্রতারণা চক্রে জড়িত সন্দেহে অভিযুক্ত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে। খড়্গপুর থানা গোটা চক্রের চার পান্ডাকে ধরলেও মূল অভিযুক্ত ভিকি ও তাঁর আর এক সঙ্গী পালিয়ে যান বলে খবর। গোপন সূত্রে পরে অবশ্য তাঁর হদিস পায় আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। শনিবারই গ্রেফতার করা হয় ভিকিকে। আজ, রবিবার আলিপুরদুয়ার আদালতে হাজির করার পর খড়্গপুর থানার পুলিশ তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে স্থানান্তরিত করে।
কী হয়েছিল?
আইআইটি খড়্গপুরের শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার নামে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণা হয়েছে বলে দিন চারেক আগেই খড়্গপুর টাউন থানায় একটি অভিযোগ রুজু হয়। অভিযোগ করেন এক পড়ুয়া। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই খড়্গপুরের এক বেসরকারি লজ থেকে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু দুজন অভিযুক্তের হদিস পাওয়া যায়নি। অভিযোগকারী জানান, তাঁকে ও আরও পাঁচ জনকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিক্যাল ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের পদে নিয়োগ করা হবে বলে শুভাশিস দাস ও ভিকি হাজারি নামে দুজন টোপ দিয়েছিল। শুভাশিস কোচবিহার এবং ভিকি আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা বলে জানিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। বেতনবাবদ ২৪ হাজার ৬৫০ টাকা পাবেন তাঁরা। জয়েনিং দ্রুত হবে। আশ্বাসও দেন শুভাশিস-ভিকি। তবে মুফতে নয়। অন্তত লাখ চারেক টাকা করে দিকে হবে। এর মধ্যে অগ্রিম বাবদ কিছু দিলেই নিয়োগপত্র হাতে তুলে দেওয়া হবে, জানান দুজন। চাকরির লোভনীয় প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান ছয় যুবক। এর পরই ফাঁদে পড়ার পালা। প্রথমে এক জনের থেকে ৩ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়। পরে দুদফায় ৫০ হাজার টাকা করে নিয়ে খড়্গপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। বলা হয়েছিল, খড়্গপুরে পৌঁছলেই নিয়োগপত্র পেয়ে যাবেন। আসলে সেখানেই অপেক্ষা করছিলেন শুভাশিস-ভিকির আরও চার সাগরেদ, অভিযোগ প্রতারিতদের। তাঁদের নাম রবিশঙ্কর দাস,অভিজিৎ দাস,সাগর কুমার রাউত এবং তপন জ্যোতি মান্না বলে জানিয়েছেন ছয় পড়ুয়া। রবিশঙ্কররাই খড়্গপুরের একটি বেসরকারি লজে রেখেছিলেন ওই ছজনকে। অভিযোগ, আইআইটি-র নামাঙ্কিত ভুয়ো নিয়োগপত্রও তাঁদের হাতে তুলে দেন এই চার জনই। কিন্তু বকেয়া পুরো না মেটায় সমস্যা তৈরি হয় । হিসেব মতো গত ১২ জুলাই ওই ছজনের জয়েনিং ডেট ছিল। কিন্তু উজ্জ্বল বাদে বাকিরা তখনও সব টাকা দিয়ে উঠতে পারেননি। টাকার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে তাঁদের। রবিশঙ্করদের মতিগতি থেকে সন্দেহ দানা বাঁধে ছয় পড়ুয়ার। ভুয়ো চক্করে পড়ে গিয়েছেন আন্দাজ করে মিথিঙ্গা নার্জিনারী খড়্গপুর সালুয়ায় থাকা তাঁর এক আত্মীয়ের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেন। ওই আত্মীয়ই তখন সালুয়ার তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত রোশন লামা-কে সঙ্গে নিয়ে খড়্গপুর টাউন থানায় বিষয়টি বিস্তারিত জানান। খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ ওই হোটেলে পৌঁছে সকলকে থানায় নিয়ে যায়। এবার ধৃত ভিকিও।
আরও পড়ুন:ভিড় বাড়ছে পোস্ট কোভিড ক্লিনিকে, সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের