প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: তৃণমূল (tmc) যে তাঁকে বহিষ্কার (expulsion) করেছে, সেই সিদ্ধান্তকেই নিজের প্রভাবশালী তকমা (influential status) ঘোচাতে কাজে লাগাতে চাইছেন ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (santanu banerjee)। ইডি সূত্রে খবর, জেরা চলাকালীন শান্তনু জানতে পারেন দল থেকে তাঁকে ও কুন্তল ঘোষকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পরই শান্তনু ইডি অফিসারদের প্রশ্ন করেন, প্রভাবশালী হলে দল কি তাঁকে এত তাড়াতাড়ি সরাতে পারত? কুন্তলকে সরাতে দল সময় নিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। সূত্রের আরও খবর, দলের সিদ্ধান্তের কথা জেনে কেঁদেও ফেলেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা।
কী জানা গিয়েছে?
গত রাতে জেরা চলাকালীনই শান্তনু জানতে পারেন তাঁকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। খবর শুনে ইডির তদন্তকারীদের তিনি জানান, সত্যিই প্রভাবশালী হলে গ্রেফতারির দু-তিনের মধ্যেই কি তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব ছিল? কুন্তলের ক্ষেত্রেও অনেক দিন সময় নিয়েছে দল, মনে করান শান্তনু। এই সিদ্ধান্তকেই কি নিজের প্রভাবশালী তকমা ঘোচাতে হাতিয়ার করতে চাইছেন অপসারিত যুব তৃণমূল নেতা? জেরা চলাকালীন কেঁদেও ফেলেন তিনি।
বহিষ্কার নিয়ে...
দিনদুয়েক আগেই তৃণমূলের মুখপাত্র ও রাজ্যে নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা ঘোষণা করেছিলেন, 'দল কোনও দুর্নীতির সঙ্গে আপস করে না। আমাদের কোনও পদাধিকারী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বা তাঁদের আত্মীয় যদি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধে আমরা অতীতেও কড়া ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় হোন বা হালের যুব নেতা কুন্তল ঘোষ বা কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাসপেন্ড রয়েছেন, কুন্তল ও শান্তনু দুজনেই অপসারিত হয়েছেন।' তবে একই সঙ্গে কর্নাটকের কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গও টানেন তিনি। জানান, সেখানে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তার জন্য সেখানকার শাসকদল বিজেপি লড়াই করছে যাতে তাদের বিধায়কদের জামিন দেওয়া যায়। তৃণমূলের সঙ্গে এখানেই তফাৎ বিজেপির, মনে করেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা। তাঁর কথায়, 'বিজেপির যে নেতারা এ রাজ্যেও হুমকি-হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও কোনও পদক্ষেপ করে না। শুভেন্দু অধিকারীর উদাহরণ দিয়ে তো বললামই।' একই সঙ্গে দিলীপ ঘোষের কথাও টানেন শশী পাঁজা। প্রসঙ্গত, গ্রেফতারির ৫দিনের মাথায় বলাগড়ের যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করল তৃণমূল। তাঁর আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ। এদিন তাঁকেও অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় জোড়াফুল শিবির। নির্দিষ্ট করে বললে কুন্তলকে গ্রেফতারির ৫২দিনের মাথায় এই বহিষ্কারে সিদ্ধান্ত নেয় দল। সম্পত্তির পাহাড় তৈরি করেছিলেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দারা। হুগলি জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। হালেই জানা যায়, চাকরি-বিক্রিতে দলীয় যোগ রয়েছে বলে জেরায় স্বীকারও করে নিয়েছেন ওই যুব তৃণমূল নেতা।
আরও পড়ুন:'ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন সওকত মোল্লা'! থানায় অভিযোগ ফুরফুরার পিরজাদার