IAS Sivaguru Prabhakaran: কথায় বলে, পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। চালাকি করে সাময়িক সাফল্য মিললেও তা লম্বা দৌড়ে খুব একটা কাজে আসে না। লক্ষ্যে অবিচল থেকে সব বাধাকে দূরে ঠেলে এগিয়ে যেতে পারলেই সাফল্য এসে ধরা দেয়। আর এই কথাই প্রভাকরণের জীবনের মূলমন্ত্র। প্রভাকরণ। শিবগুরু প্রভাকরণ। তামিলনাড়ুর এই 'জিনিয়াস' প্রমাণ করেছেন, জীবনে কোনও বাধাই বাধা নয়, যদি লক্ষ্যে স্থির থাকা যায়। দেশের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা UPSC-তে উত্তীর্ণ হয়ে প্রভাকরণ প্রমাণ করেছেন, পারিবারিক সচ্ছলতাও কোথাও গিয়ে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। প্ল্যাটফর্মের মেঝেতে শুয়ে রাত কাটিয়েছেন একসময় তিনি। সামর্থ্য ছিল না তাই পড়াশোনার খরচ চালাতে কারখানাতে কাজও করতে হয়েছে তাঁকে। আর আজ এভাবেই তিনি একজন সফল আইএএস। কেমন ছিল আইএএস শিবগুরু প্রভাকরণের জীবন?


শৈশব কেটেছে কীভাবে?


কৃষক পরিবারে জন্ম হওয়ায় দারিদ্র্যের সঙ্গেই বড় হয়ে উঠেছেন প্রভাকরণ। মা-বোন দুজনেই সারা দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করতেন, খেতের চাষাবাদ থেকে রাতে বেতের ঝুড়ি বোনা, একা হাতে সামলাতেন তাঁরা সংসার প্রতিপালনের জন্য। তাঁর বাবা মদ্যপান করতেন খুব, আর সেই থেকেই প্রভাকরণের মনে একটা জেদ জন্মায়। সংসারের কষ্ট দূর করতেই হবে। পরিবারের খরচ চালাতে একবার একটা কাঠের কারখানায় কাজও করতে হয়েছিল তাঁকে। টানা দু'বছর সেখানে কাজ করেছেন তিনি।


পড়াশোনার জীবন


তাঁর বোনের বিয়ের পর একাগ্রভাবে নিজের পড়াশোনা শুরু করেন শিবগুরু প্রভাকরণ। ২০০৮ সালে ভেলোরের ঠানঠাই পেরিয়ায় গভর্নমেন্ট টেকনলজি ইনস্টিটিউটে একটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে ভর্তি হন শিবগুরু প্রভাকরণ। কলেজের খরচ চালানোর জন্য তিনি অবসর সময়ে কিছু পার্ট-টাইম কাজ করতেন, এমনকি সপ্তাহান্তে পড়াশোনা করার জন্য সেন্ট টমাস মাউন্ট রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুয়েও রাত কাটিয়েছেন প্রভাকরণ। এরপর আইআইটি মাদ্রাজ থেকে ২০১৪ সালে এম টেক উত্তীর্ণ হন তিনি।


স্বপ্ন অনেক বড়


ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে ইউপিএসসির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন শিবগুরু প্রভাকরণ, এটাই তাঁর জীবনের লক্ষ্য ছিল। তিনবার পরীক্ষা দিয়ে ব্যর্থ হন, তবু হাল ছাড়েননি। প্রস্তুতি চালিয়ে গিয়েছেন, অটল প্রভাকরণ। চতুর্থবার ২০১৭ সালে ফের একবার পরীক্ষায় বসেন তিনি। আর এবার সাফল্য তাঁর হাতে। সর্বভারতীয় পরীক্ষায় ১০১ র‍্যাঙ্ক অর্জন করেন প্রভাকরণ।


একটি সাক্ষাৎকারে শিবগুরু প্রভাকরণ বলেছিলেন, 'অর্থ উপার্জনের জন্য আমাকে কাঠকলেও কাজ করতে হয়েছে। যেটুকু পয়সা পেতাম সেখান থেকে, কিছু সংসারের জন্য খরচ করতাম আর কিছু রেখে দিতাম আমার পড়াশোনার জন্য। তবু স্বপ্ন দেখা ছাড়িনি এক মুহূর্তের জন্য। স্বপ্নই আমাকে তাড়িত করেছে সবসময়।'


আরও পড়ুন: NEET Success Story: রাত জেগে পড়া আর দিনে দিনমজুরি, কঠোর পরিশ্রমে ভাগ্য বদলেছেন কাশ্মীরের উমর


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI