IIT Madras: উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগে এক খচ্চর-চালকের পুত্র অতুল। অতুল কুমার। সম্প্রতি তাঁর সাফল্যের কাহিনিই অবাক করেছে সকলকে। খচ্চর-চালকের কাজ তিনিও করতেন ছোটবেলা থেকেই আর এবার তাঁর জীবনে শুরু হবে নতুন অধ্যায়। পড়ার সুযোগ পেয়েছেন আইআইটি মাদ্রাজে। আইআইটি জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্স ২০২৫ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ (Success Story) হয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। একসময় কেদারনাথ ধামের খাড়া পাহাড়ি পথে ঘোড়ার পিঠে তীর্থযাত্রীদের (IIT Madras) চাপিয়ে আনা-নেওয়া করতেন অতুল। আর এবার হিমালয়ের পথ ধরে জীবনের সাফল্যের শীর্ষে ওঠা শুরু হল তাঁর। কীভাবে এল এই সাফল্য ?
একেবারে সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম অতুলের। শিক্ষার সুযোগ-সুবিধে ছিল খুবই কম। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা সম্পর্কে তাঁর সচেতনতাও ছিল খুব কম। এত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও নিজের এবং তাঁর পরিবারের জন্য একটি উন্নত জীবন গড়ে তোলার লক্ষ্যে দৃঢ় সংকল্প করেছিলেন অতুল, আর সেই থেকেই বড় স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণা পান তিনি। অতুল সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে জীবনে এগিয়ে যাওয়া এবং নিজের ও পরিবারের জন্য আরও ভাল কিছু করার তাগিদেই এই সাফল্য পেয়েছেন তিনি।
এএনআই সংবাদমাধ্যমে অতুল জানিয়েছেন, ‘আমি রুদ্রপ্রয়াগের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আমি খুব বেশি কিছু জানতামই না। পাহাড়ি এলাকায় এই সমস্ত বিষয়ে এমনিতেই খুব একটা সচেতনতা নেই। আমি জানতামও না যে আইআইটির মত কিছু হয়।’ দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পরে অতুল কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষাই দেননি মূলত যথাযথ সহায়তা ও অনভিজ্ঞতার কারণে। তবে তাঁর পথটি মোড় নেয় যখন তিনি শিক্ষকদের কাছ থেকে জানতে পারেন যে আইআইটি থেকেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা যায়। তাদের উৎসাহই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। অতুল সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পরেই শিক্ষকদের থেকে আইআইটির কথা জানতে পারি। বন্ধুরা আমাকে সমর্থন করেছিল, সাহায্য করেছিল অনেকটাই। অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।’
কেদারনাথ যাত্রা শেষ করে বাড়ি ফিরে ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে অতুল আইআইটি-জ্যামের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। এর আগে জুন মাস পর্যন্ত তীর্থযাত্রীদের ঘোড়ায় চাপিয়ে কেদারনাথ পৌঁছে দেওয়া এবং সেখান থেকে নিয়ে এসে জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন। পরিস্থিতি কঠিন ছিল। ইন্টারনেট ছিল না কোনও, থাকতেন তাঁবুতে। আর এর ফলেই তীর্থযাত্রার মরশুমে পড়াশোনা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অতুল বলেন, ‘আমার বন্ধু মহাবীর তাঁর নোটসগুলি আমায় দিয়েছিল এবং জুলাই মাস থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আমি নিয়মিতভাবে পড়াশোনা করি। পরীক্ষা হয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসে’। পরিস্থিতির এই প্রতিকূলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার গভীর আকাঙ্ক্ষা তাঁর মনোযোগকে সর্বত্র অটল রেখেছিল।
অতুলের কথায়, ‘আমার সবথেকে বড় প্রেরণা ছিল জীবনে এগিয়ে যাওয়া, সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসা এবং নিজের জন্য আরও ভাল কিছু তৈরি করা।’ অতুলের বাবা এখনও ঘোড়া চালক হিসেবে কাজ করেন এবং ছুটির দিনে অতুল নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর বাবাকে সাহায্য করেন। এই কাজ থেকেই তাদের পরিবারের আয় হয়। তাঁর দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে এবং তাঁর অনুজ বোন এখন পড়াশোনা করছে।
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI