কলকাতা: আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত, দেশের অন্যতম ধনী সিইও। বলা ভাল দেশের কনিষ্ঠতম সিইও। গোটা দেশ জুড়ে তার নামডাক। অথচ একদিন তাকেই সহ্য করতে হয়েছে প্রবল বিদ্রুপ, বন্ধুদের কাছে অপমানিত হতে হয়েছে। চাকরি থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন বহুবার, আর সেই যন্ত্রণায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। তবু জীবনের সব অন্ধকারের আড়ালেও কোথাও আলোর নিশানা লুকিয়েছিল আর সেই আলোতেই নতুন করে জীবনের মানে (Success Story) খুঁজে নিয়েছেন রাধিকা। রাধিকা গুপ্তা। আজ যিনি এডেলউইস মিউচুয়াল ফান্ডের (Edelweiss Mutual Funds) চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, তাঁর শুরুর দিনগুলো মোটেই খুব একটা সুখকর ছিল না।


ছোটবেলা থেকেই তার ঘাড়টা জন্মগত ত্রুটির কারণে খানিক বাঁকা, আর তাই নিয়ে নানা সময় মানুষজনের কাছে হাস্যাস্পদ হয়েছেন রাধিকা। কর্মজীবন যখন শুরু হয়, তখন বিভিন্ন চাকরি থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন তিনি, আর আজ মাত্র ৩৪ বছর বয়সে দেশের অন্যতম সফল সিইওদের সঙ্গে এক সারিতে উচ্চারণ করা হয় তাঁর নাম।


বাবা ছিলেন সরকারি আমলা, কাজের সুবাদে কখনও পাকিস্তান, কখনও নিউ ইয়র্ক আবার কখনও বা দিল্লিতে থাকতে হয়েছে রাধিকাকে। পরে নাইজেরিয়াতে শিফট করেন তাঁরা। সেখানেই স্কুলে তার ভারতীয়দের মত ইংরেজি উচ্চারণ শুনে খুব হাসাহাসি করত বন্ধুরা। সেই স্কুলেই চাকরি করতেন রাধিকার মা। আর তার ফলে স্কুলের প্রায় সকলেই মায়ের সঙ্গে তাঁর তুলনা করতেন। মায়ের সৌন্দর্যের তুলনায় মেয়ে হিসেবে রাধিকা কেন এত কুৎসিত? এই প্রশ্নই সব সময় তাড়া করে বেড়াত তাঁকে।



সাত সাতবার চাকরির ইন্টারভিউতে ব্যর্থ হয়ে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি রাধিকা। নিজের উপর থেকে সমস্ত বিশ্বাস চলে গিয়েছিল তাঁর। অন্ধকারের সুড়ঙ্গে যেন কেউ ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল তাঁকে। অসহ্য মানসিক যন্ত্রণায় জানালা দিয়ে ঝাঁপ দিয়ে দেন রাধিকা, গুরুতরভাবে আহত হয়ে চিকিৎসা চলে বহুদিন। তিনি ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। হাসপাতালের ডাক্তাররা ছাড়তে চাননি তাঁকে, তবু অদম্য জেদে ৮ নম্বর ইন্টারভিউর জন্য বেরিয়ে পড়েছিলেন রাধিকা গুপ্তা। আর সেবার খালি হাতে ফিরতে হয়নি। চাকরি জুটেছিল 'ম্যাকেন্সি' কোম্পানিতে।  


তারপর ২৫ বছর বয়সে মার্কিনি চাকরি ছেড়ে ভারতে ফিরে এসে নিজের স্বামী এবং কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে শুরু করেন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি যা পরে চলে যায় এডেলউইস মিউচুয়াল ফান্ডের হাতে। আর এখানেই ক্রমে ক্রমে সিইও হয়ে ওঠেন রাধিকা গুপ্তা। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে সিইও! অনেকেই তাঁকে বলেন, 'A woman with broken neck'। এক সাক্ষাৎকারে রাধিকা বলেন, 'জীবনে পতন থাকবেই। তবু এগিয়ে যেতে হবে। কারণ দ্য শো মাস্ট গো অন।'



আরও পড়ুন: IPS Success Story : খুন হন বাবা, 'গন্ধমাদন পর্বত-প্রমাণ' বাধা কাটিয়ে মাত্র ২৩-এই IPS বজরং


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI