P Balamurugan: বাড়িতে আট ভাইবোন ছিলেন তাঁর, বাবা মারা গিয়েছিলেন। মাত্র ৯ বছর বয়স থেকেই পড়াশোনার বদলে করতে হয়েছে খবরের কাগজ বিক্রি। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ইউপিএসসির মত বিরাট বড় পরীক্ষার কথা চিন্তা করাও দুষ্কর বিষয় ছিল। আর সেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে তাতে উত্তীর্ণ (UPSC Success Story) হওয়া ছিল আরও কঠিন। আর এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন পি বালামুরুগন, শুধু যে নিজের স্বপ্নপূরণ করেছেন তাই নয়, একজন সফল আইএফএস অফিসার (IFS Officer) হন তিনি। তাঁর সাফল্যের কাহিনি অনুপ্রেরণা দেবে।
আইএফএস বালামুরুগনের সাফল্যের কাহিনি মূলত কঠিন পরিশ্রম আর একনিষ্ঠতার কাহিনি। এক অতি সাধারণ পরিবারে জন্ম হয়েছিল পি বালামুরুগনের। যে শৈশবে তাঁর শিক্ষিত হওয়ার কথা, পড়াশোনা করার কথা, সেই সময়ে অল্প হলেও দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি, তবে পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোরও কাজ করেছিলেন পি বালামুরুগন।
বালামুরুগন পরে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে ১৯৯৪ সাল নাগাদ তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। তাঁর আরও ৭ ভাইবোন ছিলেন বাড়িতে। ফলে সকলের ভরণপোষণের দায়ভার গিয়ে বর্তায় তাঁর মা পালানিমলের উপরে। তাঁর মা মাত্র দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন, বাধ্য হয়েই সমগ্র সংসারের দায়ভার একার কাঁধে নিতে হয়। সেই সময় থেকেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন পি বালামুরুগন।
সেই সময় একজন খবরের কাগজ বিক্রেতাকে তিনি তামিল খবরের কাগজ পড়ে শোনাতে বলতেন আর তাঁর থেকেই জানতেন দেশ বিদেশের নানা ঘটনা। মাসে ৯০ টাকা দিয়ে সাবস্ক্রিপশনের মত চাঁদা দিতে বলেছিলেন সেই বিক্রেতা। আর যেহেতু বালামুরুগন বলেছিলেন যে তাঁর কাছে টাকা নেই, তাই তিনি মাসে ৩০০ টাকা বেতনের একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেন তাঁর জন্য। তাঁর কাকাও সেই কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। নিজের সমস্ত গয়না বিক্রি করে একটা ছোট্ট জায়গা কেনেন তাঁর মা চেন্নাইতে। একটা খড়ের চালের ঘরে একসঙ্গে সকলেই থাকতেন। এই সময় থেকে বালামুরুগন ভাবতেন যে তাঁকে শিক্ষিত হয়ে এই অবস্থা বদলাতে হবে।
তাঁর পড়াশোনার জন্য যে জায়গা তাঁর মা কিনেছিলেন তার একটা অংশ বিক্রিও করে দেন তাঁর মা। মাত্র ৯ বছর বয়স থেকেই খবরের কাগজ বিক্রি করে নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাতেন তিনি। পড়ার নেশাও ছিল তাঁর মধ্যে। আর এর মাধ্যমেই ইউপিএসসির প্রস্তুতি নিতে পেরেছিলেন পি বালামুরুগন। মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি চেন্নাই থেকে বি-টেক পাশ করেন ইলেকট্রনিক্সে, আর তারপরেই টিসিএসের চাকরি পেয়ে যান তিনি। ভাল বেতন ছিল সেই চাকরিতে। সেই জন্য বিদেশেও যেতে হয়েছিল তাঁকে। কিতু সেই চাকরি ছেড়ে ইউপিএসসির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তিনি। ২০১৮ সালে সফলভাবে ইউপিএসসি উত্তীর্ণ হয়ে একজন আইএফএস অফিসার হয়ে ওঠেন পি বালামুরুগন।
আরও পড়ুন: Recruitment News: প্রভিডেন্ট ফান্ড সংস্থায় লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই হবে নিয়োগ, বেতন ৬৫ হাজার পর্যন্ত
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI