Roshni Mukherjee: কোনও মানুষ যখন ভিতর থেকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয় যে সে কোনও কাজ করেই ছাড়বে, তখন আর পৃথিবীর কোনও কিছুই তাঁর কাছে অসাধ্য থাকে না। তেমনই একজন ছোটবেলা থেকেই চাইতেন যাতে দেশের ছেলে-মেয়েরা উন্নত মানের শিক্ষা (Success Story) পায়, আর সেই কাজ করতে নিজের প্যাশনের জন্য ১৫ লাখ টাকা প্যাকেজের চাকরিও হেলায় ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। নিজে এমন এক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছেন যেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা উপযুক্ত শিক্ষা পাবে, দুস্থ পড়ুয়ারা বিনামূল্যেই পড়ার সুযোগ পাবে। রোশনি মুখার্জীর (Roshni Mukherjee) নিজের হাতে তাঁর প্রতিষ্ঠান 'লার্ন-ও-হাব' গড়ে তোলার কাহিনি এরকমই।


ধানবাদে নিতান্ত মধ্যবিত্ত এক পরিবারে জন্ম হয় রোশনি মুখার্জীর। তাঁর বাবা-মা চেয়েছিলেন যাতে তাঁর মেয়ে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি হয়। আর সেইজন্য কাছের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তিও হন রোশনি। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল রোশনির। তাঁর জুনিয়র ক্লাসের পড়ুয়ারা যখন কিছু বুঝতে পারত না, রোশনি তাদের পড়া বুঝিয়ে দিত এবং সেই পড়া বোঝানোর মধ্যে অফুরান আনন্দ খুঁজে পেত রোশনি।


পরে উচ্চতর শিক্ষার জন্য দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন রোশনি, পদার্থবিদ্যা নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন তিনি। কলেজে পড়ার সময়েও তাঁর বন্ধুদের পদার্থবিদ্যার সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতেন তিনি। তারপর ব্যাঙ্গালোরে চাকরি নিয়ে চলে যান রোশনি, কিন্তু সেই সময়েও তাঁর মনের মধ্যে এটাই ছিল যাতে তিনি পড়াতে পারেন ছেলে-মেয়েদের। তাঁর ইচ্ছে ছিল তিনি এমনভাবে পড়াবেন যাতে আরও বেশি সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী তাঁর ক্লাসে অংশ নিতে পারে।


২০১১ সালে ইউটিউবে পড়ানো শুরু করেন রোশনি মুখার্জী। চাকরির পাশাপাশি তিনি ইউটিউবে নিজের একটি চ্যানেল খুলে ফেলেন এবং সেখানে পদার্থবিদ্যা নিয়ে ভিডিয়ো করে পোস্ট করতে থাকেন। সেই চ্যানেলের নাম প্রথমে তিনি দিয়েছিলেন 'এক্সাম ফিয়ার'। রোশনি জানিয়েছেন যে সেই সময় ভারতে ইউটিউবে অত ভাল কনটেন্ট ছিল না। অনেক কম সংখ্যক ছেলে-মেয়ে ইউটিউবে পড়াশোনা করত। তিনি জানান যে সেই সময় একজন ভিডিয়োতে কমেন্ট করেছিলেন যে পড়া ১০ মিনিটে রোশনি বুঝিয়েছেন তা তাঁর স্কুলের শিক্ষক ১ সপ্তাহেও বোঝাতে পারেননি। আর এই কমেন্ট পড়েই তাঁর উৎসাহ আরও বেড়ে যায়।


যে সময় শুরু করেছিলেন সেই সময় তাঁর কাছে রিসোর্স অনেক কম ছিল। রাস্তার ধারে ঘর হওয়ার দরুণ গাড়ি-ঘোড়ার আওয়াজ আসত, ফলে ভোর ৪টের সময় উঠে তাঁকে ভিডিয়ো বানাতে হত। আবার অনেক সময় মাঝরাতেও ভিডিয়ো বানিয়েছেন তিনি। ২০১৪ সালে তিনি ১৫ লাখের চাকরি ছেড়ে দেন এবং ২০১৭ সালে নানা প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে তাঁর চ্যানেলের পারফরম্যান্স খারাপ হতে থাকে। ২০১৯ সালে তিনি চ্যানেলের নাম বদলে করেন 'লার্ন-ও-হাব'। এরপর আরও অনেককে এই কাজে নিয়োগ করেন তিনি। ২০২১ সালে এই টিমে যোগ দেন ৩০ জন সদস্য। বেঙ্গালুরুতে নিজের অফিস চালু করেন তিনি এবং এই প্ল্যাটফর্মের একটি অ্যাপও নিয়ে আসেন রোশনি।  


আরও পড়ুন: Recruitment News: রেলের নিয়োগে বাড়ল শূন্যপদ, ১৪ হাজারেরও বেশি পদে এবার চাকরির সুযোগ


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI