লখনউ: মেধা ও পরিশ্রমের কাছে হার মানে সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি। এ কথা আরও একবার প্রমাণ করলেন উত্তরপ্রদেশের এক পরীক্ষার্থী। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৮.২ শতাংশ নম্বর পেয়ে আমেরিকার প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেলেন তিনি। আমেরিকার আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল স্কলারশিপ সহ ভর্তি হচ্ছেন তিনি।

লখিমপুর জেলার সারাসান গ্রামের অনুরাগ তিওয়ারি জানিয়েছেন, তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। সেখানে অর্থনীতি নিয়ে পড়বেন তিনি।
সোমবার সিবিএসই-র ঘোষিত ফল অনুযায়ী হিউম্যানিটিজের পড়ুয়া ১৮ বছরের অনুরাগ অঙ্কে ৯৫, ইংরেজিতে ৯৭, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৯৯ এবং ইতিহাস ও অর্থনীতিতে ১০০ করে নম্বর পেয়েছেন।
আমেরিকার প্রথম সারির কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য ২০১৯-এর ডিসেম্বরে স্কলাস্টিক অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট (এসএটি)-তে ১,৩৭০ নম্বর পেয়েছেন তিনি।
গত ডিসেম্বরে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়ার কথা জানিয়ে অনুরাগকে চিঠি দেওয়া হয়। এনরোলমেন্টের ভাইস প্রোভোস্ট জোনাথন আর বারডিক চিঠিতে লেখেন, অভিনন্দন! আর্টস ও সায়েন্সের কলেজে অ্যাডমিশন সিলেকশন কমিটি আপনার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আগাম আবেদনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করছে।

কিন্তু অনুরাগের এই যাত্রা আদৌ মসৃণ ছিল না। পড়াশোনার জন্য সীতাপুর জেলার একটি আবাসিক স্কুলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা সচ্ছ্বল নয়। পরিবারে সদস্য বলতে বাবা ও মা এবং তিন দিদি। অনুরাগ বলেছেন, প্রথমে সীতাপুরে পাঠাতে আগ্রহী ছিলেন না বাবা-মা। বাবা কৃষক, মা গৃহবধূ। তাঁরা ভেবেছিলেন, পড়াশোনার জন্য বাইরে চলে গেলে আমি কৃষিকাজে হয়ত ফিরব না। কিন্তু আমার দিদিরা বাবা-মাকে রাজি করিয়েছিলেন। এখন অবশ্য তাঁরা খুশি, আমার জন্য গর্বিত।
বিদেশে পড়াশোনার ধারণা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে অনুরাগ বলেছেন, তাঁর সবসময়ই হিউম্যানিটিজ ও লিবারেট আর্টস নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছে ছিল। দশম শ্রেণির পর অনেকেরই পরামর্শ উপেক্ষা করেই হিউম্যানিটিজকে বেছে নিয়েছিলেন। সেই সময় অনেকেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে সায়েন্স ও কমার্স নিয়ে পড়াশোনার কথা বলেছিলেন।
অনুরাগ বলেছেন, শেষ পর্যন্ত তাঁর শিক্ষক ও দিল্লির কাউন্সিলররা লিবারেল আর্টস নিয়ে পড়তে চাইলে আইভি লিগ কলেজের জন্য চেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আর এ জন্যই কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করেন এবং এসএটি-তে বসেন।
অনুরাগ বলেছেন, তিনি আগস্টেই কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে চলে যেতেন। কিন্তু ভ্রমণ ও ভিসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে তা এখন সম্ভব নয়। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেখানে যেতে পারবেন বলে তাঁর আশা।
পড়াশোনার শেষে দেশে ফিরে শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করতে চান অনুরাগ।

Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI