কলকাতা: কোর্টে পরপর ধাক্কা খেয়ে ২২ কোম্পানি বদলাল ৮০০ কোম্পানিতে! পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল কমিশন । ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি কমিশনের । হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট। গত কয়েকদিন ধরে, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিরামহীন আইনি লড়াইয়ের সাক্ষী হয়েছে বাংলা। তবে, কোথাও কোনও সুরাহা পায়নি রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার। এরপর গতকালই বাহিনী নিয়ে কমিশনকে কার্যত গাইডলাইন বেঁধে দেয় হাইকোর্ট। বাতিল করে দিল নামমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর কমিশনের 'চাল'।
পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় বাহিনী-মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খায় রাজ্য। পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ১৫ জুনের সেই নির্দেশই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় বাহিনী-বিরোধিতার আবেদন। পঞ্চায়েত ভোটে সর্বত্র মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। হাইকোর্টের সেই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করতে আমরা আগ্রহী নই। তাই কমিশন ও রাজ্যের স্পেশাল লিভ পিটিশন খারিজ করা হল। রাজ্যের আবেদন খারিজ করে জানায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর ডিভিশন বেঞ্চ।
শেষ পর্যন্ত কোর্টে একের পর এক ধাক্কা খেয়ে ২২ কোম্পানি বদলাল ৮২২ কোম্পানিতে! আদালতের চাপের মুখে অবশেষে আরও ৮০০ কোম্পানি চাইতে বাধ্য হল কমিশন। সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়ে মুখরক্ষায় ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল কমিশন। এরপরেই হাইকোর্টে চূড়ান্ত ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় কমিশনকে। হাইকোর্টের দেওয়া ডেডলাইন শেষ হওয়ার আগেই এবার চাইল আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর রিক্যুইজিশন পাঠানো হল কমিশনের তরফে।
পঞ্চায়েত ভোটে ৬১ হাজারেরও বেশি বুথ, ৮২২ কোম্পানি চাইল কমিশন । ৮২২ কোম্পানি এলেও প্রায় ৪০ হাজার বুথে দেওয়া যাবে না কেন্দ্রীয় বাহিনী। এক দফায় রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট, ৮২২ কোম্পানি কি যথেষ্ট? ২০১৩-র ৫ দফার পঞ্চায়েত ভোটে ছিল ৮২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী । ২০২৩-এ ২০১৩-র চেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে বলেই জানিয়েছিল হাইকোর্ট। ২০১৩-য় ৫ দফায় ভোট হয়, ২০২৩-এ এক দফায় পঞ্চায়েত ভোট হবে। জেলার সংখ্যা বাড়ার কারণ দেখিয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে বলেছিল হাইকোর্ট।
ভোটের আগে ১৫ দিনে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কার পরও কেন্দ্রীয় বাহিনীতে অনীহা প্রকাশ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শুরু থেকেই জল্পনা ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা কি বাড়বে? মাত্র ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী কি যথেষ্ট? এ দিনও সদুত্তর দিতে পারেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী-প্রশ্নে মন্তব্য করেন রাজীব সিন্হা।
উল্লেখ্য, এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের রবীন্দ্রভবনে ভোট কর্মীদের বিক্ষোভ। প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে হবে এবং তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এই দাবিতে প্রশিক্ষণ চলাকালীনই বিক্ষোভ দেখান ভোট কর্মীরা।