আমদাবাদ: প্রথম বার গুজরাতে ভোটের ময়দানে পদার্পণ (Gujarat Assembly Elections 2022)। সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে তাদের নিয়ে। কিন্তু আম আদমি পার্টির (Aam Aadmi Party/AAP) এক নেতাকে নিয়ে দিনভর নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল গুজরাত (Gujarat Elections 2022)। দলের নেতাকে বিজেপি অপহরণ করেছে বলে একদিকে যেখানে অভিযোগ তুলল আপ, সেখানে ওই নেতা জানালেন, বিজেপি মোটেই তাঁকে অপহরণ করেনি। শুধু তাই নয়, নিজের দলের বিরুদ্ধেই একের পর এক মারাত্মক অভিযোগ তুললেন তিনি।
গুজরাতে আপ প্রার্থীকে অপহরণ করার অভিযোগ
সুরত ইস্ট থেকে কাঞ্চন জরিওয়ালাকে (Kanchan Jariwala) প্রার্থী ঘোষণা করে আপ। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে দলের নেতারা একে একে দাবি করতে থাকেন যে, কাঞ্চনকে অপহরণ করা হয়। পুলিশ এসে নির্বাচনী (Election Commission) দফতরে টেনে নিয়ে যায় তাঁকে। সেখানে নিয়ে গিয়ে নিগ্রহ করা হয় তাঁকে। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তুলে নিতে বাধ্য করা হয় মনোনয়ন। এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপি-রই (BJP) হাত রয়েছে বলে দাবি করেন আপ নেতৃত্ব। সেই নিয়ে ট্যুইটারেও সরব হন তাঁরা।
আপ জানায়, কাঞ্চনকে অজ্ঞাত পরিচয় কোনো স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর বাড়িতেও তালা ঝুলছে। পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। দলের নেতা মণীশ সিসৌদিয়া জানান, ৫০০ পুলিশকর্মী কাঞ্চনকে ঘিরে ছিল। নির্বাচন দফতরে নিয়ে গিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয় তাঁকে।
নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করে ট্য়ুইটও করেন আপ নেতা সিসৌদিয়া। তিনি লেখেন, ‘একজন প্রার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়েছে তাঁকে দিয়ে। এর থেকে জরুরি পরিস্থিতি আর কী হতে পারে নির্বাচন কমিশন? দ্রুত পদক্ষেপ করতে আবেদন জানাচ্ছি’।
আপ নেতা রাঘব চাড্ডাও ট্যুইটারে একই দাবি করেন। একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘দেখুন কী ভাবে পুলিশ এবং বিজেপি-র গুন্ডারা আমাদের সুরতের প্রার্থীকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করছে। স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আজকের দিন প্রহসনে পরিণত হয়েছে’।
সেই নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ দায়ের করে আপ। কিন্তু সকাল থেকে রাত হতে হতে ঘটনাক্রম বদলে যায় আমূল। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই ফুঁসে ওঠেন কাঞ্চন। জানান, বিজেপি তাঁকে অপহরণ করেনি। ছেলের বন্ধুদের সঙ্গে দূরে গিয়েছিলেন তিনি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের কারণ জানতে চাইলে বলেন, “মনোনয়ন তুলে নেওয়ার কারণ হল, সুরত ইস্টের কর্মীরা সব পদত্যাগ করছিলেন। টাকা চাওয়া হচ্ছিল আমার কাছে। ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই আমার। তাই টাকার দাবি মেনে না নিতে না পেরেই তুলে নিই মনোনয়ন।”
আপ প্রার্থী নিজে অভিযোগ অস্বীকার করলেন
শুধু তাই নয়, দলের তরফেও চাপ আসছিল বলে দাবি করেন কাঞ্চন। তিনি বলেন, “দলের তরফে চাপ ছিল। বার বার ফোন করে হেনস্থা করা হচ্ছিল আমাকে। তাই ছেলের বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে যাই। তাদের কেউই বিজেপি কের না। এ বার কী করব, তা জানাব শীঘ্রই।” দেশবিরোধী, গুজরাত বিরোধী কটাক্ষ শুনতে শুনতে বিবেকের ডাকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলেও জানান কাঞ্চন। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পুলিশি বেষ্টনীতে কেন ছিলেন, তা নিয়ে কিছু খোলসা করেননি।