নয়াদিল্লি: আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি জারির পর নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেই আবহেই এবার আবগারি দুর্নীতির টাকা বিজেপি-র ঝুলিতে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলল আম আদমি পার্টি। আদালতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট জানিয়েছে, আবগারি নীতিতে মধ্যস্থতা করে দক্ষিণের লবিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ১০০ কোটি টাকা পেয়েছিল দিল্লি সরকার। তবে AAP-এর দাবি, আবগারি দুর্নীতির টাকা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি-র ঝুলিতে ঢুকেছে। (Arvind Kejriwal Arrest)


বৃহস্পতিবার রাতে ED-র হাতে গ্রেফতার হন কেজরিওয়াল। সাত দিনের ED হেফাজতে রয়েছেন তিনি। কিন্তু আবগারি মামলায় Aurobindo Pharma সংস্থার উল্লেখ টেনেছে AAP. তাদের দাবি, Aurobindo Pharma সংস্থার ডিরেক্টর শরৎচন্দ্র রেড্ডি ২০২২ সালে গ্রেফতার হন। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি-কে মোটা টাকা চাঁদা দেন তিনি। (Delhi Liquor Case)


সাংবাদিক বৈঠকে সেই সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র তুলে ধরেন দিল্লির কেজরিয়াল সরকারের দু'নম্বর বলে পরিচিত অতিশী। তিনি বলেন, "গত দু'বছরে ঘুরেফিরে একটি প্রশ্ন উঠে এসেছে বার বার। টাকা কোন পথে হাতবদল হয়েছে? কার কাছে গিয়েছে টাকা? AAP-এর কোনও নেতা, মন্ত্রী বা কর্মীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ মেলেনি।"


আরও পড়ুন: Arvind Kejriwal: 'গ্রেফতারি বেআইনি, অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে', ED-কে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে কেজরিওয়াল


অতিশী আরও বলেন, "২০২২ সালের ৯ নভেম্বর তলব করা হয় শরৎচন্দ্রকে। উনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, কখনও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়নি তাঁর, কখনও কথা বয়নি, AAP-এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক বা সংযোগ নেই তাঁর। একথা বলার পর দিনই ওঁকে গ্রেফতার করে ED. বেশ কয়েক মাস জেলে থাকার পর বয়ান বদল করেন উনি। জানান, কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, আবগারি নীতি নিয়ে কথা হয়েছিল তাঁদের মধ্যে। এটা বলার পরই তড়িঘড়ি জামিন মঞ্জুর হয়ে যায় ওঁর।"


এর পর সম্প্রতি SBI প্রদত্ত নির্বাচনী বন্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য তুলে ধরেন অতিশী। তিনি জানান, বিজেপি-কে কোটি কোটি টাকা চাঁদা দেয় Aurobindo Pharma. ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বরের মধ্যে মোট ৫২ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কেনে তারা, যার ৬৬ শতাংশ বিজেপি-র কাছে যায়। বাকি ১৫ টাকা যায় তেলঙ্গানার ভারত রাষ্ট্র সমিতির কাছে। ২.৫ কোটি টাকা যায় অন্ধ্রপ্রদেশের তেলুগু দেশম পার্টির কাছে।"


অতিশী জানান, দিল্লিতে আবগারি নীতি প্রণয়নের সময়ই বিজেপি-কে ৪.৫ কোটি টাকার বেশি চাঁদা দেন শরৎচন্দ্র। গ্রেফতার হওয়ার পর আরও ৫৫ কোটি টাকা দেন। প্রথমে গ্রেফতার হন শরৎচন্দ্র, তার পর টাকা দেন। কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে বয়ান দিতেই জামিন পেয়ে যান। তার পর আরও টাকা দেন। বিজেপি বন্ড ভাঙিয়ে সেই টাকা তোলে।


এর আগে, কংগ্রেসের জয়রাম রমেশও Aurobindo Pharma এবং বিজেপি-র সংযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানান, CBI, ED, IT তদন্ত করছে এমন ২১ সংস্থার থেকে কোটি কোটি টাকা তোলে বিজেপি। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে সেই টাকা দলের তহবিলে জমা পড়ে।