ইন্দৌর: বিপুল জনসমর্থন পেয়ে ২০১৮ সালে সরকার গড়া হলেও, মাত্র দু'বছরের মাথায় মধ্যপ্রদেশের মসনদ হাতছাড়া হয় কংগ্রেসের। বিদ্রোহী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং তাঁর অনুগামীরা বিজেপি-তে যোগ দিলে, রাতারাতি সরকার পড়ে যায় কমলনাথের। ঘোড়া কেনাবেচা করে, অনৈতিক ভাবে বিজেপি তাদের নির্বাচিত সরকার ফেলে দিয়েছে বলে সরব হলেও, সংখ্যার জোরে এতদিন মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা ধরে রেখেছে বিজেপি। কিন্তু এবার ক্ষমতা বাড়িয়ে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে বেল ইঙ্গিত মিলল বুথফেরত সমীক্ষায়।


The ABP-C Voter Exit Poll অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশ ফের কংগ্রেসের দখলে চলে যেতে পারে। সেখানে ১১৩ থেকে ১৩৭টি আসন পেতে পারে কংগ্রেস। বিজেপি-র দখলে যেতে পারে ৮৮ থেকে ১১২টি আসন। কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের হারও এবার বাড়তে পারে। গত বার তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৪০.৯ শতাংশ। এবার তা বেড়ে ৪৪.১ শতাংশ হতে পারে। সেই তুলনায় বিজেপি-র প্রাপ্ত ভোটের হার কমে ৪১ থেকে ৪০.৭ শতাংশে গিয়ে ঠেকতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে সমীক্ষায়। 


মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার মোট আসন সংখ্যা ২৩০। গত ১৭ নভেম্বর একদফায় সেখানে ভোটগ্রহণ হয়। ২০১৮ সালে কংগ্রেস একাই ১১৪টি আসন পেয়েছিল। বিজেপি পেয়েছিল ১০৯টি আসন। তবে এবার সেখানে নির্বাচনে নাম লিখিয়েছে সমাজবাদী পার্টিও। উত্তরপ্রদেশ থেকে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টির মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করে। সম্প্রতি I.N.D.I.A জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন অখিলেশ যাদব। মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনে নাম লেখানোর পর কংগ্রেসের ভোট কাটার অভিযোগ ওঠে সমাজবাদী পার্টির বিরুদ্ধে। কিন্তু দৌড়ে কংগ্রেসের ধারেকাছেই নেই সমাজবাদী পার্টি, এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে বুথফেরত সমীক্ষায়। মধ্যপ্রদেশে তারা খাতা খুলতে পারবে না বলেই দেখা গিয়েছে  তাতে।


আরও পড়ুন: Rajasthan Cvoter Exit Poll: কংগ্রেস-বিজেপি, দুই দলেরই গলার কাঁটা অন্তর্দ্বন্দ্ব, রাজস্থানে পাল্লা ভারী কার, কী বলছে বুথফেরত সমীক্ষা?


মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকারকে নিয়ে বিজেপি-র অন্দরেই মতবিরোধ রয়েছে। এবারের নির্বাচনের প্রচারেও তার ইঙ্গিত মেলে। শিবরাজের পরিবর্তে মূলত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সামনে রেখে সেখানে প্রচার চালায় বিজেপি। সেই সুযোগকে নিজেদের পক্ষে কাজে লাগাতে চেষ্টায় ত্রুটি নেই কংগ্রেসের। শিবরাজ সিংহের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে চাইছে তারা। 


মধ্যপ্রদেশে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ব্যাপম দুর্নীতিকে ব্যবহার করেছে কংগ্রেস। এর পাশাপাশি, পটওয়ারি পরীক্ষায় অনিয়ম, রাজ্য বিজেপি-র অন্দরের দ্বন্দ্বও তাদের সুবিধা করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে ছত্তীসগঢ়ের মতো, ক্ষমতায় এলে মধ্যপ্রদেশেও কৃষকদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মাফ করে দেওয়ার পাশাপাশি, মহিলাদের মাসিক ১৫০০ টাকা ভাতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শুধু তাই নয় প্রতি কুইন্টালে কৃষকদের কাছ থেকে ২৬০০ টাকা দামে গম, ২৫০০ টাকা দামে চাল কেনার পাশাপাশি, বেকার যুবকদের মাসিক ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা ভাতারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২ টাকা কেজি দরে গোবর কেনার কথাও জানিয়েছে।