কলকাতা: ঠিক সাত দিন বাদে শুরু হচ্ছে লোকসভা ভোট (West Bengal Lok Sabha Election 2024)।  রাজ্যের ৪২টি আসনে কার পাল্লা ভারী? আঁচ পাওয়ার চেষ্টা করল এবিপি সি ভোটার সমীক্ষা (ABP Cvoter Opinion Poll 2024 Part 2) । আজ দ্বিতীয় পর্ব।


আলিপুরদুয়ার: উত্তরবঙ্গের এই লোকসভা কেন্দ্রে প্রথম দফা অর্থাৎ ১৯ এপ্রিলই ভোটগ্রহণ। ৩৭ বছর ধরে আরএসপি-র গড় বলে পরিচিত ছিল আলিপুরদুয়ার। এবার এখানে কে শেষ হাসি হাসবেন? সে কথা জানা যাবে ৪ জুন। তবে এবিপি সি ভোটার সমীক্ষা এখানে সম্ভাব্য জয়ী হিসেবে বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গাকে এগিয়ে রাখছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন প্রকাশ চিক বরাইক, জোট প্রার্থী মিলি ওঁরাও। গত বারের সাংসদ জন বার্লাকে এবার প্রার্থী না করায় দৃশ্যতই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু পরে তাঁকে মনোজের হয়ে প্রচারে সামিল হওয়ার কথা বলতে শোনা গিয়েছে। 


কলকাতা উত্তর: কলকাতা উত্তর আসনটি নিয়ে ভোটের মুখে কম আলোচনা হয়নি। প্রথমে তাপস রায়ের 'অভিমান' এবং তার পর তৃণমূল-ত্যাগ বিস্তর হইচই তৈরি করে। এই কেন্দ্র থেকে এবার তিনি বিজেপির প্রার্থী। উল্টো দিকে রয়েছেন তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস প্রার্থী করেছে তাদের বর্ষীয়ান ও পোড়খাওয়া নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। যদিও এবিপি সি ভোটার সমীক্ষায় সম্ভাব্য জয়ী বলা হচ্ছে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।


মালদা দক্ষিণ: এবিপি সি ভোটার সমীক্ষা বলছে, এই কেন্দ্রে জোর টক্করের সম্ভাবনা রয়েছে। মাত্র ৩ শতাংশ ভোট স্যুইং হলে ফলাফল বদলে যেতে পারে। তবে তা যদি না হয়, তা হলে গত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত যা ছবি তাতে জয়ের দৌড়ে জোট প্রার্থী ইশা খান চৌধুরীকে এগিয়ে রাখছেন সমীক্ষকরা।


ঝাড়গ্রাম: একসময়ের বামদুর্গ বলে পরিচিত এই লোকসভা কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছে এবিপি সি ভোটার সমীক্ষা। মাত্র ১ শতাংশ ভোট স্যুইং হলেই ফলাফল বদলাতে পারে। এখানে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কালীপদ সরেন, বিজেপির প্রার্থী প্রমথ টুডু এবং জোট প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সোনামনি টুডু। যদি ভোট স্যুইং না হয়, তা হল বিজেপির প্রমথ টুডু এগিয়ে থাকতে পারেন ইঙ্গিত এবিপি সি ভোটার সমীক্ষায়।


জয়নগর: এখানেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত। ১ শতাংশ ভোট স্যুইং হলে ফল বদলাতে পারে এই কেন্দ্রেও। তবে তা যদি না হয়, সেক্ষেত্রে জয়ের দৌড়ে তৃণমূলের প্রতিমা মণ্ডলকে এগিয়ে রাখছেন সমীক্ষকরা। তাঁর উল্টো দিকে বিজেপির হয়ে লড়ছেন অশোক কান্ডারি, জোটের প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ মন্ডল।


ঘাটাল: 'হাইভোল্টেজ' এই কেন্দ্র নানা কারণে শিরোনামে। বিনোদন দুনিয়ার দুই জনপ্রিয় মুখ এখানে একে অন্যের মুখোমুখি। তৃণমূলের হয়ে ২০১৪, ২০১৯ সালের নির্বাচনে জিতেছেন দেব ওরফে দীপক অধিকারী। তবে এবার তিনি নির্বাচনে লড়বেন না জানিয়েছিলেন। যদিও শেষমেশ রাজি হন। উল্টো দিকে রয়েছেন বিজেপির হিরণ চট্টোপাধ্যায়। আর জোটের প্রার্থী হয়েছেন তপন গঙ্গোপাধ্যায়।  এবিপি সি ভোটার সমীক্ষায় ইঙ্গিত, এই কেন্দ্রে জোর টক্কর হতে পারে। মাত্র ৩ শতাংশ ভোট স্যুইং হলে ফলাফল বদলে যেতে পারে। তা যদি না হয় তা হলে তৃণমূলের তারকা প্রার্থীকে এগিয়ে রাখছেন সমীক্ষকরা।


সমীক্ষা সম্পর্কে দু-কথা...
৫ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল, অর্থাৎ গত ৩ মাস এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ১ লক্ষ ১১ হাজার ২৫৬ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষকরা। তবে এই সমীক্ষা কোনওভাবেই রাজনৈতিক ভবিষ্য়দ্বাণী নয়। ভোটের ফল কী হতে চলেছে, তার পূর্বাভাসও নয়। বরং ভোটারদের মন বোঝার একটা চেষ্টা মাত্র। অতীতে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভোট-সমীক্ষার আভাস বাস্তবের কাছাকাছি পৌঁছেছে।আবার বহুবার এমনও হয়েছে, যে সমীক্ষার ইঙ্গিত পুরোপুরি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সি ভোটারের এবারের সমীক্ষাতেও একাধিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।সেজন্য একে ধ্রবসত্য মনে করে আনন্দিত হওয়ার, বা দুঃখিত হওয়ার-- কোনওটাই কোনও কারণ নেই। আরও একটি বিষয়। সি ভোটারের এই সমীক্ষার সঙ্গে আমাদের এডিটোরিয়াল পলিসির কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের জার্নালিস্টিক জাজমেন্টেরও কোনও জায়গাই নেই এখানে। সমীক্ষক সংস্থার দেওয়া সংখ্যাগুলো আমরা হুবহু আপনাদের সামনে তুলে ধরি মাত্র। কুড়ি বছর ধরে আপনাদের সমীক্ষা দেখিয়ে আসছি। তবে গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা। তাই চূড়ান্ত ফলাফল জানতে ৪ জুনের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনও উপায়ই নেই।


আরও পড়ুন:বঙ্গে কোন আসনে এগিয়ে কে? কোথায় লড়াই হাড্ডাহাড্ডি? একনজরে এবিপি সি ভোটার সমীক্ষার সব আপডেট