কলকাতা: অশোক দিন্দা ক্রিকেট খেলার সময় তিনি কয়েকবার মাঠে গিয়ে খেলা দেখেছেন। ইডেনে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে আগুনে স্পেলে ৭ উইকেট নিয়ে বাংলাকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন দিন্দা। ক্লাব হাউসে বসে খেলা দেখেছিলেন তিনি। তবে রাজনীতির বাইশ গজে দিন্দার লড়াইয়ে সব সময় পাশে থাকতে পারছেন না। প্রচার পর্বে একদিন ময়নায় গিয়েছিলেন। তারপরই কলকাতায় ফিরে আসেন। রবিবাসরীয় ভোটগণনার জন্য দিন্দা যখন পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের স্ট্রং রুমের নিকটবর্তী হোটেলে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন, স্ত্রী শ্রেয়সী তখন মেয়ে টিয়ারাকে নিয়ে কলকাতার ফ্ল্যাটে। ভোটের ফলাফলের জন্য তিনিও অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়।


টেনশন হচ্ছে? এবিপি লাইভকে শ্রেয়সী বললেন, 'সত্যি কথা বলতে কী, অশোকের জয়ের ব্যাপারে আমি খুবই আশাবাদী। ফিঙ্গার ক্রসড। নার্ভাসনেস নেই। জানি না পরে কী হবে। এখনও অবধি বেশ প্রত্যয়ী। অপেক্ষায় উদগ্রীব হয়ে রয়েছি। আমি একেবারেই চাপে নেই। বরং আইসিএসই বা উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরনোর আগে এর চেয়ে বেশি স্নায়ুর চাপে থাকতাম।'


দিন্দা রাজনীতির ময়দানে নামার পর এবং ভোটে দাঁড়ানোর পরও কি এতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন? শ্রেয়সী বলছেন, 'ওকে যখন ময়নায় প্রার্থী করে দল, খুব যে আশাবাদী ছিলাম বলব না। কারণ, ময়না খুবই সংবেদনশীল এলাকা। তবে ও হাল ছাড়েনি। কাজ করে গিয়েছে। দলীয় কাজকর্মে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল যে, আমার সঙ্গে কথা বলার পর্যন্ত সময় পায়নি। পরিশ্রম করেছে, তার ফল পাবেই।  অশোককে বলেছিলাম সেই কথা।' লেডি লাক? শ্রেয়সী হেসে বলছেন, 'এখন জয়েন্ট লেডি লাক। টিয়ারা রয়েছে না!' 


রবিবার কোলাঘাটে যেখানে ভোটগণনা হবে, তার ঠিক পাশেই দিন্দার অস্থায়ী ঠিকানা। দলীয় কর্মীদের নিয়ে সেখানেই একটি হোটেলে রয়েছেন। আর প্রস্তুতি নিচ্ছেন রবিবাসরীয় ভাগ্যপরীক্ষার। সদ্য রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন। আর রাজনীতির বাইশ গজে নামামাত্র তাঁর হাতে নতুন বল। প্রতিপক্ষ ব্যাটিংকে তছনছ করে দিতে অধিনায়কেরা বাংলার পেসারের ওপর ভরসা করতেন। রাজনীতির ময়দানেও সেই একই ভূমিকায় দিন্দা। জাতীয় দলের প্রাক্তন পেসারকে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। প্রচার করেছেন, প্রচারে বেরিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। রাজনীতির আঙ্গিকে সবরকম অভিজ্ঞতাই সঞ্চয় করে ফেলেছেন দ্রুত। ভোটগণনার আগে বেশ ফুরফুরে মেজাজে প্রাক্তন পেসার।


শনিবার বিকেলে এবিপি লাইভকে দিন্দা বললেন, 'সকাল থেকে উপোস করেছিলাম। তমলুকের বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিয়েছি। পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছি। ভীষণ ইতিবাচক রয়েছি।' ক্রিকেট মাঠে অনেক কঠিন ম্যাচ খেলেছেন। খেলোয়াড়েরা বলেন, বড় ম্যাচের আগের দিন অনেকেরই একটা অস্থিরতা কাজ করে। সেরকম কিছু অনুভূতি? দিন্দা বলছেন, 'আমি জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। ক্রিকেট মাঠের একটা কথা আছে। আগে লিড নিতে হবে, তারপর পরবর্তী কৌশল। আমাদেরও আগে ম্যাজিক ফিগার ১৪৮ নিশ্চিত করতে হবে। তারপর ব্যবধান বাড়াতে হবে। অমিত শাহ বলেছিলেন দুশো আসন হবে। প্রাথমিক লক্ষ্য ১৪৮। সেভাবেই মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছি।'