কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের জন্য দু-দফায় মোট ৩৮ জনের নাম লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha election 2024) প্রার্থী (Candidate) হিসেবে ঘোষণা করেছে বিজেপি (BJP)। কিন্তু, তার কোনওটাতেই নাম নেই অভিনেতা ও বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষের (Rudranil Ghosh)। মঙ্গলবার সকালে তিনি বিজেপির একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। বিজেপি বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলতে থাকেন, টিকিট না পেয়ে গোঁসা হয়েছে রুদ্রের। আর তাই কবিতা লেখা ও বলা বন্ধ করে টিকিট না পাওয়ার যন্ত্রণায় ভুগতে শুরু করেছেন। তাঁকে নিয়ে রীতিমতো কটাক্ষ করে একটি কবিতা আবৃত্তিও করতে শোনা যায় তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে।


রুদ্রনীলের ক্ষোভের কারণ জানতে মঙ্গলবার তাঁর মুখোমুখি হয়েছিলেন এবিপি আনন্দের প্রতিনিধি। চেষ্টা করেছিলেন রুদ্রবাণী শোনার! একান্ত আলাপচারিতায় অকপটে নিজের মনের অনেক ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথা প্রকাশ করেন সম্প্রতি অজয় দেবগণের সঙ্গে বলিউডি সিনেমা 'ময়দান'-এ স্কিন শেয়ার করা বঙ্গ বিজেপির এই জনপ্রিয় নেতা। আসুন দেখেনি আমাদের প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাব কী বললেন রুদ্রনীল ঘোষ!


প্রশ্ন- অনেকেই আশা করছিলেন যে আপনি এবার লোকসভায় প্রার্থী হবেন। এখনও পর্যন্ত প্রার্থী তালিকায় নাম দেখতে না পেয়ে আপনি কি অভিমানী? খারাপ লাগা আছে? 


রুদ্রনীল- দেখুন একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমারও তো কিছুটা আশা ছিল। ফলত এখনও পর্যন্ত তা না হওয়াতে মন আছে, শরীর আছে। আর এগুলো থাকলে তা তো খারাপ হবেই। রাজনৈতিক ক্ষেত্রের মধ্যে দিয়েই তো বিভিন্ন ধরনের প্রার্থী হয়ে ওঠা। লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তো সাতটি বিধানসভা নিয়ে একজন লোকসভার প্রার্থী লড়াই করেন। ফলে জনপ্রিয়তার একটা বিষয় তো থেকেই যায়। পাশাপাশি তাঁর দলের প্রতি ডেডিকেশন এবং দলের প্রতি সময় দেওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। আমি আমার জীবন-জীবিকা ও প্রাণ সবটা সরিয়ে রেখেই দলের প্রতি সময় দিয়েছি। তাই আশা তো একটা ছিলই। ফলে ৩৮ জনের মধ্যে নাম না আসায় মন তো খারাপ হয়েছেই। তবে এখনও চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা বাকি রয়েছে। আসানসোল, বীরভূম, ডায়মন্ডহারবার ও ঝাড়গ্রাম। যার মধ্যে তিনটি জেনারেল। যদিও ৩৮ জনের মধ্যে নাম না আসায় মন তো আছে তাই খারাপ হয়েছে। অবশ্যই খারাপ লাগছে। আমিও তো মানুষ। অভিনয়ে যেমন নিজের ফাঁক খোঁজার চেষ্টা করি তেমনি এখানেও খতিয়ে দেখব যে সমস্যা কোথায় হচ্ছে। হয়তো ৩৮ জন যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা আমার থেকে যোগ্য বলেই দল মনে করেছে।


প্রশ্ন- তার মানে আপনি অভিমানী হলেও দলের প্রতি নিজের দায়বদ্ধতা ভুলছেন না?


রুদ্রনীল- যেভাবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ও পড়ে নানা ধরনের অত্যাচার বিজেপির কর্মী ও নেতাদের উপর হয়েছে। তখনও শক্তহাতে লড়াই চালিয়ে গেছি। এখন একই ভাবে দলের ঝাণ্ডা কাঁধে নিয়ে দায়বদ্ধতা বজায় রেখে কাজ করে যাব। তবে মনে হয় যে সমস্ত নেতারা প্রার্থী ঠিক করেছেন তাঁরা ব্য়স্ততার জন্য আমাকে দেখতে পাননি, মানে আমাকে খেয়াল করে উঠতে পারেননি। তবে আমি দলের প্রতি নিজের কর্তব্য ও দায়বদ্ধতা কখনই ভুলব না। তা আপনি ২০১৭-১৮ সালের সময় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি যোগদান করার দিনগুলো থেকেই দেখছেন। 


প্রশ্ন- দিলীপ ঘোষের আসন পরিবর্তন সম্পর্কে আপনি কী মনে করছেন?


দিলীপদা একজন লড়াকু মানুষ। তাঁর সময়ে তিনি পাথরে ফুল ফুটিয়েছেন। তাই হয়তো দিলীপ ঘোষকে বড় লড়াইয়ের ময়দানে নামিয়ে জয় ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করছে দল। যেমন আমি পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় পড়েছিলাম কৃষ্ণনগরে। গলা চিড়ে গেলেও দিন ১০-১২টার বেশি সভা করেছি আমি। তাই ওখান থেকে লড়ার সুযোগ পেলে অত্যন্ত খুশি হতাম। তবে ওখান থেকে যিনি দাঁড়িয়েছেন সেই অমৃতা রায়ও অত্যন্ত সুযোগ্য প্রার্থী। এই বয়সেও তিনি যে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ময়দানে নেমেছেন তাতে তাঁকে কুর্নিশ জানাতে হয়।


প্রশ্ন- হাওড়া এবং কৃষ্ণনগর কোথা থেকে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলে খুশি হতেন?


রুদ্রনীল- হাওড়া হলে তো বেশি খুশি হতাম। তবে এমনটা নয় যে আমার খুশিটাই চূড়ান্ত। কারণ দল যেখানে যে দায়িত্ব আমাকে দেবে তা পালন করাই আমার কর্তব্য। 


আরও পড়ুন: Varun Gandhi: আদর্শগত ফারাক বুঝিয়ে দেন রাহুল, BJP-তে ব্রাত্য বরুণকে এবার কংগ্রেসে স্বাগত জানালেন অধীর