গুয়াহাটি : অসমে জিতেও স্বস্তি নেই বিজেপিতে। মুখ্যমন্ত্রী পদে কে বসবেন তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। সর্বানন্দ সোনোয়াল না হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে মুখ্যমন্ত্রীর গদির। মোদি, শাহের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় অসম।


এনআরসি-র পর সিএএ। একে একে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া তৈরি হয়েছিল অসমে। সুযোগ বুঝে সেই হাওয়াকে কাজে লাগিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু এতকিছুর পরও সেই বিজেপিতেই আস্থা রাখল উত্তরপূর্বের এই রাজ্য। যদিও রাজনীতির হাওয়া মোরগ বলছে, জয় পেয়েও চিন্তা কমেনি বিজেপির। বাইরের ঝড় থামলেও এখন ঘরেই তৈরি হয়েছে নয়া উদ্বেগ।


দ্বন্দ্বের সূত্রপাত বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী মুখ নিয়ে। এমনিতে ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজ্যের দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রীকেই প্রোজেক্ট করে নির্বাচনে যায় বিজেপি। যদিও এবার সেরকম কিছু ঘটেনি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে বার বার একই উত্তর এসেছে। এমনকী রবিবার জয়ের পরও একই উত্তর দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা অসমে বিজেপির পর্যবেক্ষক জয় পান্ডা। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী কে হচ্ছেন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ''আমাদের পার্লামেন্টারি বোর্ড এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।''


অসম রাজনীতির বিশারদরা বলছেন, ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি স্বচ্ছ সর্বানন্দ সোনোয়ালের। বিগত দিনে তাই তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসায় বিজেপি। যদিও একধাপ এগিয়ে ডাইনামিক নেতৃত্বের শিরোপা পান হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এমনকী রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি সামলানোয় হিমন্তের প্রশংসা করেন খোদ বিরোধীরাও। অর্থমন্ত্রী রূপেও রাজ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন তিনি। বিগত তিন বছরে মোদি-শাহের নেক নজরে চলে এসেছেন এই প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা। তবে শুধু অসমে নয়, উত্তরপূর্বেও গেরুয়া ঝড় তোলায় বড় অবদান রয়েছে এই নেতার। এক সময় তরুণ গগৈয়ের সরকারেও হেভিওয়েট জায়গা পেয়েছিলেন তিনি। তাই মাঠের রাজনীতির সঙ্গে প্রশাসন সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।


রাজ্যে বিজেপির ফের জয়ের পিছনে কী কারণ এদিন তা তুলে ধরেন জয় পান্ডা। তিনি বলেন, '' অসমে বিজেপির সরকার আসার পর রাজ্যে বিগত পাঁচ বছরে কোনও অশান্তি হয়নি। পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকে জোর দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়েছে। বোরোল্যান্ড সমস্যার সমাধানে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। যা রাজ্যবাসীর নজর এড়ায়নি। তাই ভোটবাক্সেও তার ফল দেখা গিয়েছে।''


অসম বিধানসভা নির্বাচনের ফল বলছে, ১২৬টি আসনের মধ্যে ম্যাজিক ফিগার ৬৪।যার মধ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৭৫টি ও ইউপিএ ৫০টি আসনে জয়ী অথবা এগিয়ে রয়েছেন। অন্যান্যরা এগিয়ে একটি আসনে।