কলকাতা: বাংলার মতোই পড়শি রাজ্যে অসমে আর কয়েক মাস পর বিধানসভা ভোট। সি ভোটারের সমীক্ষায় স্পষ্ট ইঙ্গিত অসমে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে বিজেপি। এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় ১৯ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে, যার ১২ লক্ষই বাঙালি। এই নিয়ে উত্তাল হয়েছে অসম। আবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু করার প্রতিবাদে হিংসাত্মক আন্দোলনে নেমেছেন অসমের ভূমিপুত্ররা। অর্থাৎ, বিজেপির সামনে জোড়া সঙ্কট। কিন্তু, সমীক্ষায় ইঙ্গিত এই সুযোগে সুবিধা নিতে ব্যর্থ হতে পারে কংগ্রেস। প্রায় দেড় দশক অসম শাসন করা তরুণ গগৈয়ের মৃত্যুর পর কংগ্রেস এখন কার্যত ক্যাপ্টেনহীন জাহাজ। তাঁর ছেলে গৌরব গগৈ দ্রুত উপরে উঠে এলেও সর্বানন্দ সোনওয়াল এবং হিমন্ত বিশ্বশর্মার জুটির সামনে তাঁর এখনও সাফল্যের কার্যত কোনও সম্ভাবনা নেই বলে আভাস সি ভোটারের সমীক্ষায়। তারা বলছে, অসমে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসতে পারে বিজেপি।
১২৬ আসনের অসম বিধানসভায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ পেতে পারে ৭৩ থেকে ৮১টি আসন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ পেতে পারে ৩৬ থেকে ৪৪টি আসন। মুসলিম প্রধান দল বদরুদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফ পেতে পারে ৫ থেকে ৯টি আসন। অন্যান্যরা পেতে পারে শূন্য থেকে ৪টি আসন।
সি ভোটারের সমীক্ষায় ইঙ্গিত এনডিএ পেতে পারে ৪৩ শতাংশ ভোট। ইউপিএ-র ঝুলিতে আসতে পারে ৩৫ শতাংশ ভোট। ৮ শতাংশ ভোট পেতে পারে এআইইউডিএফ। অন্যান্য পেতে পারে ১৪ শতাংশ ভোট।
সি ভোটারের সমীক্ষার ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী পদে জনপ্রিয়তার নিরিখে সবার উপরে রয়েছেন অসমের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল, দ্বিতীয় স্থানে বিজেপির উত্তর পূর্বের প্রধান কারিগর হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তারপরই রয়েছেন পিতার মৃত্যুর দ্রুত গতিতে উপরে ওঠা আসা কংগ্রেসের তরুণ তুর্কি, কালিয়াবরের সাংসদ গৌরব গগৈ।
তবে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে। তা হল, ভূমিপুত্র অসমিয়ারা মোদি সরকারের সিএএ-র অত্যন্ত বিরোধী। সিএএ পাস করলেও তা এখনও কার্যকর করেনি কেন্দ্র। এক্ষেত্রে ভোটের আগে মোদি সরকার যদি সিএএ কার্যকর না করে, তাহলে বাংলায় মতুয়া ভোটারদের একটা বড় অংশ বিজেপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। উল্টোদিকে ভোটের আগে মোদি সরকার সিএএ কার্যকর করলে অসমের ভূমিপুত্ররা বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ হতে পারে। অর্থাৎ সিএএ কার্যকর করা বা না করা, প্রভাব ফেলতে পারে বাংলা-অসম বিধানসভা ভোটের ফলে।