কলকাতা: কিছুদিন আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের অন্যতম ভরকেন্দ্র ছিল অধিকারী পরিবার। সেই অধিকারী পরিবারের মেজ সন্তান তথা নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক গৈরিক শিবিরে যোগ দেওয়ার পর নন্দীগ্রামে প্রথম জনসভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভা থেকে মমতার সাফ ঘোষণা, আগামী বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে তিনিই লড়বেন তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে। এভাবে শুভেন্দুর গড়ে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। নন্দীগ্রামের পাশাপাশি ভবানীপুর থেকেও লড়বেন, এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন তিনি।
নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়কও পাল্টা বিকেলে মমতার গড়ে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েলেন শুভেন্দু। তিনি বলেছেন, নন্দীগ্রামে বিজেপির যে-ই প্রার্থী হোন না কেন, মমতাকে ৫০ হাজার ভোটে হারাবেন।


এদিন ক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশন থেকে রাসবিহারী মোড় পর্যন্ত মিছিল শেষে সভায় শুভেন্দু বলেছেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস এখন প্রাইভেট লিমিটেড হয়ে গেছে। তৃণমূল নেত্রী একাই নাকি ২৯৪ আসনে ভোটে লড়বেন। বিহারের এক ঠিকাদারের বুদ্ধিতে চলছেন। দিলীপ ঘোষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকে ছুঁড়ে ফেলব। তৃণমূল নেত্রীর ৫ বছর পরপর নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়ে। নন্দীগ্রামের মানুষের জন্য কী করেছেন তৃণমূল নেত্রী?
৭ জেলার থেকে লোক এনে ৩০ হাজার লোক নিয়ে সভা করেছেন। আজ সেখানে দাঁড়িয়ে বড়বড় কথা বলছেন।‘নন্দীগ্রামকাণ্ডে যাঁর নামে সিবিআইয়ের চার্জশিট সেই আজ তৃণমূলে। তৃণমূল প্রাইভেট কোম্পানি, তাই যে কোনও জায়গায় দাঁড়াতে পারেন।
বিজেপি নন্দীগ্রামে যাঁকেই দাঁড় করাক, ৫০ হাজার ভোটে মমতাকে হারাব। তৃণমূল নেত্রীকে হারাতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন কলকাতাকে লন্ডন বানাবেন। আমফানের সময় কলকাতার মানুষ দেখতে পেয়েছেন। দক্ষিণ কলকাতার সব আসনে জিতবে বিজেপি।পরের রোড শো হবে গড়িয়া থেকে হাজরা পর্যন্ত।’

মমতার নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাকে কটাক্ষ করেছেন   বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেছেন, ‘ভবানীপুরে হারবেন বুঝেই নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা মমতার।বাংলার ২৯৪ আসনের যে কোনওটিতে লড়তে পারেন। প্রত্যেক আসনেই পিসি-ভাইপোর হার নিশ্চিত। তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির কলসি ভরে গেছে।’

নন্দীগ্রাম থেকে শুভেন্দুই প্রার্থী হবেন  কিনা, তা নিয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। মমতা নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার কথা জানানোর পর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তৃণমূল নেতা সৌগত রায় বলেছেন, হিম্মত থাকলে শুভেন্দু লড়ুক নন্দীগ্রামে।

২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে ৮১ হাজার ২৩০ ভোটে জিতেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফল অনুযায়ী শুভেন্দুর নন্দীগ্রামে তৃণমূলের এগিয়ে থাকার ব্যবধান কমে হয়েছে ৬৮ হাজার ৩৯১।