বাঘাযতীনে সিপিএম সমর্থকদের ওপর হামলা, সিসিটিভি ফুটেজে ছবি, তবুও অধরাই অভিযুক্তরা
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ | 02 May 2016 01:56 PM (IST)
কলকাতা: ভোট মিটতেই সিপিএমের উপর হামলার অভিযোগ বাঘাযতীনে। একের পর এক সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। হামলার অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁর অজুহাত, এটা নাকি প্রত্যাঘাত।এই ঘটনায় এখনও অধরা অভিযুক্তেরা। যদিও সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে অভিযুক্তদের ছবি। সিসিটিভি-র ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, রাতের অন্ধকারে, আলো-আঁধারি পথ দিয়ে হেঁটে আসছে দলে দলে মানুষ! কারও হাতে লাঠি।কারও হাতে রড! কেউ আবার রাস্তা থেকেই কুড়িয়ে নিচ্ছে ইটের টুকরো! এই ছবি খাস কলকাতার বুকে বাঘাযতীনের ফুলবাগান। ঘড়িতে সময়, রবিবার রাত ১০ টা ১৯! যার কিছুক্ষণের মধ্যেই হামলা হয় স্থানীয় সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে! তাঁদের অপরাধ, তাঁরা কেউ সিপিএমের এজেন্ট, কেউ সিপিএম কর্মী, কেউ আবার সিপিএম সমর্থক। অভিযোগ, সেই কারণেই, রবিবার রাতে শাসকের রোষে পড়তে হল তাঁদের! রাতের অন্ধকারে একের পর এক বাড়িতে ইট-পাথরের বৃষ্টি। দরজায় লাঠি-রডের আঘাত! হামলাকারীদের গলায় শেষ করে দেওয়ার হুঙ্কার! অভিযোগ, শাসকদলের সন্ত্রাসের হাত থেকে রেহাই পাননি অথর্ব বৃদ্ধও! অভিযোগের আঙুল তৃণমূলের দিকে। আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ হল, গোটা ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ! এতবড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও একজনকেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ! এমনকি সিসিটিভি ফুটেজে যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁদের অনেকেই যে তৃণমূল সমর্থক, তা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত! তবে, স্বীকারোক্তির সঙ্গে অজুহাতও হাজির। তাঁর অজুহাত, এটা নাকি প্রত্যাঘাত। বিরোধীদের প্রশ্ন, ফুটেজে উপস্থিত লোকজন যদি তৃণমূলের হয়, তাহলে এই লাঠিধারীরা কি ভিনগ্রহ থেকে এলেন? সে উত্তর অবশ্য মেলেনি শাসকদলের কাউন্সিলরের কাছ থেকে! গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সরব সিপিএম। তাদের অভিযোগ, বাঘাযতীনে যখন তৃণমূলের হাতে মার খাচ্ছিলেন তাদের এজেন্ট, তখন নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল পুলিশ! সোমবার সকালে আক্রান্ত সিপিএম নেতা-কর্মীদের বাড়ি যান যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। বিরোধীদের প্রশ্ন, ভোটের দিন যে পুলিশ বীরবিক্রমে দুষ্কৃতী ঠেঙিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট করাল, ভোট মিটতেই তাদের এই হাল কেন? তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলার সুর কড়া হতেই, সত্যিই পুলিশ ভীতু হয়ে গেল? বিরোধীদের প্রশ্ন, রাতে শহরের বুকে, লাঠি-রড নিয়ে যখন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হল, তখন কোথায় ছিল পুলিশ? সিসিটিভি ফুটেজ থাকা সত্বেও কেন ধরা গেল না একজনকেও? আর যাঁদের বিরুদ্ধে কি না বাড়ি বাড়ি হামলা চালিয়ে একটা কাচ পর্যন্ত অক্ষত না রাখার অভিযোগ, সেই তৃণমূলও কি না পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ! বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তর অভিযোগ, পুলিশের একাংশ মনে করছে, সিপিএম ক্ষমতায় এসে গিয়েছে। যদিও, সিপিএমের প্রশ্ন, মার খেলেন তাঁদের এজেন্ট, বাড়ি ভাঙচুর হল তাঁদের সমর্থকদের। অথচ, কাউকে ধরল না পুলিশ! এরপরও তৃণমূল কী করে বলে যে, পুলিশ সিপিএমের পক্ষ নিচ্ছে? নাকি এই অভিযোগ আসলে প্রকৃত দোষীদের উপর থেকে নজর ঘোরানোর কৌশল? তাই কি এই ঘটনায় যে তিনটি এফআইআর করা হয়েছে, তার মধ্যে দু’টিই তৃণমূলের তরফে করা হয়েছে? যাতে বিষয়টি গুলিয়ে দেওয়া যায়? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।