কলকাতা: ভোটে সন্ত্রাস রুখতে, রাজ্যে এসে একগুচ্ছ দাওয়াই দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পর্যবেক্ষকদের। পাশাপাশি, ভোটের জল রুখতেও দিলেন নয়া নির্দেশ। কাজ হবে তো? প্রশ্ন বিরোধীদের।
কিলোমিটারের পর কিলোমিটার গিয়েও দেখা মিলছে না কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারির! কোথাও আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই নিয়ম ভেঙে বুথে ঢুকছে রাজ্য পুলিশ।
গত দু’দফার ভোটকে কেন্দ্র করে এমন ছবি রাজ্যের নানা প্রান্তে দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে সরব বিরোধীরা। অভিযোগের পাহাড় জমেছে নির্বাচন কমিশনের ঘরে। এই পরিস্থিতিতে এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী-মোতায়েন নিয়ে আরও কড়া হওয়ার বার্তা দিল কমিশনের ফুল বেঞ্চ।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, তৃতীয় দফার ভোটে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হবে ৭টি জেলায়। এলাকা টহল দেবে দেড় হাজার মোবাইল ভ্যান। কোন বুথে কী হচ্ছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে জওয়ানদের। কোনওরকম অস্বাভাবিকত্ব দেখলেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
পাশাপাশি, রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী এজেন্টরা যাতে নির্ভয়ে কাজ করতে পারেন, তাও নিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। এদিন এমনই নির্দেশ দিল কমিশনের ফুল বেঞ্চ।
এদিন বিকেলে বীরভূম, মালদা এবং মুর্শিদাবাদের পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তাঁদের নির্দেশ দেন, মোবাইলে ফোন করলেই যাতে তাঁদের পাওয়া যায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অশান্তির খবর পেলেই ছুটে যেতে হবে এলাকায়।
অনেকক্ষেত্রেই ভোট-গ্রহণের শেষ ২ ঘণ্টায় ভোটের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে। এর মোকাবিলায় জাইদির দাওয়াই, এবার থেকে ভোটের দিন বিকেল ৫টায় বুথগুলিকে জানাতে হবে, তখনও পর্যন্ত কত ভোট পড়েছে। ফের একই তথ্য দিতে হবে সন্ধে ৬টায়। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিতে হবে, কত ভোটার এখনও লাইনে দাঁড়িয়ে। ভোট শেষে, মোট ভোটের সংখ্যা লিখিতভাবে জানিয়ে দিতে হবে কমিশনকে। যাতে সই থাকবে প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং এজেন্টদের।
সূত্রের দাবি, এদিনের বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও, ঠারেঠোরে কমিশন বুঝিয়ে দেয় যে, তাঁর কাজে তারা সন্তুষ্ট নয়!মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নাসিম জাইদি বলেন, আইনের শাসক প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হিংসার অভিযোগ প্রচুর আসছে, পোস্ট পোল। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত হয় সেটা দেখবেন। কমিশনকে রিপোর্ট দেবেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে হবে।
কমিশন দাওয়াই তো দিল, কিন্তু বাস্তবে, তার প্রয়োগ কতটা হয়, তা বোঝা যাবে রবিবারই।