নয়াদিল্লি: ক্রস-ভোটিং নিয়ে জল্পনা ছিল। মঙ্গলবার সন্ধে হতেই দেখা গেল, রাজ্যসভা নির্বাচনে (Rajya Sabha Election 2024) সেই জল্পনা ক্রমে বাস্তব হয়ে উঠছে। তার জেরে এই মুহূর্তে হিমাচল প্রদেশের বছরখানেক পুরনো কংগ্রেস সরকারের হাল টলোমলো। উত্তরপ্রদেশের ছবিও বিজেপি-বিরোধীদের পক্ষে অত্যন্ত অস্বস্তিকর। এখনও পর্যন্ত যতটুকু বোঝা যাচ্ছে, তাতে সমাজবাদী পার্টি, সুহেলদেও ভারতীয় সমাজ পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টির বিধায়করাও বিজেপি প্রার্থীর দিকে ভোট দিয়েছেন। এই আবহে বিরোধীদের মুখরক্ষা করছে একমাত্র কর্নাটক। সেখানকার ৩টি রাজ্যসভা আসনেই জয়ী কংগ্রেস।


কর্নাটক...
রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমার বলেন, 'দলের একতা ও শক্তির প্রতিফলন ঘটেছে আজকের ফলাফলে। সংবাদমাধ্যম, দল ও সমস্ত বিধায়ককে ধন্যবাদ।' তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এদিন ধন্যবাদ জানানোর করার সময় রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকেও মনে করেন তিনি। দলের আর এক নেতা তথা বিজয়ী ৩ সাংসদের এক জন, নাসের হুসেন আবার বলেন, 'এই জয় প্রত্যাশিত ছিল। তিনটে আসনে জয়ের মতো যথেষ্ট ভোট আমাদের কাছে ছিল। বরং, তিনটি আসনে জেতার জন্য যা ভোট দরকার তার থেকে বেশি ভোট পেয়েছি।'  লোকসভা ভোটের আগে এই সাফল্য যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সে কথাও শোনা যায় তাঁর মুখে। শোনা যাচ্ছে, দক্ষিণের এই রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক, এস টি সোমশেখরের বিরুদ্ধে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে পারে গেরুয়া শিবির। দলের অভিযোগ, তিনি কংগ্রেসের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।


হিমাচল প্রদেশ...
দক্ষিণের কর্নাটকের নিরিখে একেবারে উল্টো ছবি উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশে। এখানে গত বছরখানেক ধরে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও রাজ্য়সভার সাংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সব হিসেবনিকেশ বদলে গিয়েছে। ২০২২ সালের বিধানসভা ভোটে হিমাচল প্রদেশের ৬৮টি আসনের মধ্যে ৪০টি গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতে। বিজেপি পেয়েছিল মোটে ২৫টি আসন। অথচ রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচনে দেখা গেল, কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি কার্যত হারের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এবার ৩ জন নির্দলেরও সমর্থন পেয়েছিল। তা সত্ত্বেও এই ধরনের বিশাল 'ধাক্কার' নেপথ্যে 'ক্রস ভোটিংয়ের হাত' দেখছে শতাব্দীপ্রাচীন দল। উল্টো দিকে, প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক হর্ষ মহাজন আপাতত বিজেপির 'হুকুম কা ইক্কা।' মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুক্কুর অবশ্য অভিযোগ, গায়ের জোর খাটিয়ে ফলাফলের 'ভোলবদল' করেছে বিজেপি। এমনকি, হরিয়ানা পুলিশ ও সিআরপিএফের বিরুদ্ধে ৫-৬ জন কংগ্রস বিধায়ককে 'তুলে নিয়ে যাওয়ারও' অভিযোগ আনেন তিনি।


উত্তরপ্রদেশ...
গণনা এখনও চলছে। তবে যে অষ্টম রাজ্যসভা আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোটাভুটি বাধ্যতামূলক করেছিল বিজেপি, সেই আসনের ক্ষেত্রেও ক্রস ভোটিংয়ের অভিযোগ উঠছে।  সমাজবাদী পার্টির ৭ জন বিধায়ক,  সুহেলদেও ভারতীয় সমাজ পার্টির ১ জন বিধায়ক এবং বহুজন সমাজ পার্টি এক বিধায়ক বিজেপির প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন বলে অনুমান। এমন যে হতে পারে, তার আঁচ গত কালই মিলেছিল। সপা প্রধান, অখিলেশ যাদব আয়োজিত নৈশভোজে ৮ জন বিধায়ক অনুপস্থিত ছিলেন। সেই ঘিরে জল্পনা শুরু হয়। মঙ্গল সন্ধেয় দেখা গেল,সেই জল্পনাই সত্যি।   
  


আরও পড়ুন:রাজ্যসভা নির্বাচনে গড়াপেটার অভিযোগ, তার মধ্যেই হিমাচলে সঙ্কট কংগ্রেসের, বিধায়ক ভাঙানোয় অভিযুক্ত BJP