ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Security) নিরাপত্তা পেতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক (ISG MLA) নৌশাদ সিদ্দিকি। বিজেপির (BJP) বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতিকে অবশ্য় সে পথে হাঁটতে হয়নি। সূত্রের খবর, দলের কাছে আর্জি জানাতে চার জনের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু কী ভাবে?


মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার পথে আক্রান্ত...
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মন্ডলের অভিযোগ, নানুরে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। অভিযোগের তির  তৃণমূলের দিকে। এর পরেই আর ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপত্তার জন্য দলের কাছে আবেদন করেন সন্ন্যাসীচরণ। গত কাল অর্থাৎ রবিবারই, তাঁকে চার জনের কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, বিষয়টি নিয়ে তিনি জেলা পুলিশের দ্বারস্থ হলেন না কেন? সন্ন্যাসীচরণের বক্তব্য, সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার পথে তাঁকে মারধর করা হয়। স্রেফ বরাতজোরে বেঁচে যান তিনি। শুধু তাই নয়। অতীতেও একাধিকবার আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি। তাই, রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা না রেখে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে ছিলেন। 


কী দাবি ছিল আইএসএফ বিধায়কের?
পঞ্চায়েতের মনোনয়ন ঘিরে ভয়ঙ্কর অশান্ত হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় বিধিনিষেধকে হেলায় উড়িয়ে বাঁশ, লাঠি, গাছের ডাল হাতে নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে হাজির হয়ে যান তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। রুমালে মুখ ঢেকে ডান্ডা হাতে ISF-কে ঠান্ডা করতে রাস্তায় নামেন তাঁরা, এমনই অভিযোগ। মুখে মুখে অ্যাকশনের কথা। প্রকাশ্যেই ভাঙড়ের ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির পিঠের চামড়া তোলার হুঁশিয়ারি শোনা যায়, অভিযোগ এমনও। জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মঙ্গলবার তুলকালাম কাণ্ড হয়েছিল ভাঙড়ে। এক আইএসএফ প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হন বলেও দাবি। আহত হন একাধিক আইএসএফ কর্মী। রক্ত ঝরে পুলিশেরও। তার পরদিনও একই রকম উত্তাপ ভাঙড়জুড়ে।  তৃণমূল প্রার্থীদের মনোনয়নে সুরক্ষা ঢালের ভূমিকা নিয়েছিলেন স্বয়ং আরাবুল ইসলাম। সকাল ১১টা থেকে মনোনয়ন পর্ব শুরু হয়। তার প্রায় আড়াই ঘণ্টা আগেই ভাঙড় ২ নম্বর ব্লক অফিসে দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে হাজির হয়ে যান তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিমুল ইসলাম। বিডিও অফিস চত্বরে মোতায়েন ছিল প্রচুর পুলিশ। এর পরই নিরাপত্তার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে যান আইএসএফ বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য ছিল, 'রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েও কোনও নিরাপত্তা না পেয়ে হাইকোর্টে গিয়েছিলাম। কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে আমার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছিল।' বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে বলেন, 'রাজ্যের বিশাল সংখ্যক বিধায়ক নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাঙড়ের বিধায়কের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া প্রয়োজন।' সেই নির্দেশ অনুযায়ী, পরে সিআইএসএফের ৭ জনের একটি দল তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বও নেয়।
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতিকে অবশ্য এত কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। 


আরও পড়ুন:'ভুয়ো ব্যালট পেপার তৈরি করা হচ্ছে', বিস্ফোরক সুকান্ত