গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক সেরে ফেরার পথে আক্রান্ত হলেন বিজেপি প্রার্থী ও নেতা-সহ বেশ কয়েকজন। গত কাল রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর এক ব্লকের কেওড়াডাঙ্গা পঞ্চায়েত এলাকায়। মারধরের ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের বিরুদ্ধে।


কী ঘটেছিল?
ঘটনায় কেওড়াডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৯ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী ভোলানাথ মণ্ডল ও অঞ্চল কনভেনর রমেশ পণ্ডিতের মাথা ফেটেছে। তাঁদের আঘাত গুরুতর। গত রাতেই দু'জনকে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। দু'জনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় কলকাতায় রেফার করা হয়েছে। আজ সকালে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হবে তাঁদের। এই মারধরের ঘটনায় বিষ্ণুপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা পরিবহন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডলের আত্মীয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন বিজেপির-সহ সভাপতি সুফল ঘাটু। বিজেপির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল উল্টে বিজেপি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছেন। দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে এই গণ্ডগোল বলে তিনি জানান। তৃণমূলের আক্রান্ত কর্মী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।


আক্রান্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি...
অন্য দিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার দাঁতন ৯ নম্বর অঞ্চলের বেলমুলা গ্রামে তৃণমূলের বুথ কার্যালয়ের পাশেই তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা এবারের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী উত্তম বেরার মুদিখানার দোকানে গভীর রাতে আগুন লেগে যায়। খবর যেতেই সেখানে পৌঁছে যান দাঁতন থানার পুলিশ ও বেলদার এসডিপিও। দমকলের একটি ইঞ্জিন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা থেকে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন লাগার নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে,অভিযোগ তৃণমূল নেতার। উত্তমের কথায়, 'পাকার ঘরের ভেন্টিলেটর ভেঙে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমি অঞ্চল সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় বহু দিন ধরেই পিছনে লেগেছিল। এমনিতে জিততে পারবে না। তাই আমার একমাত্র সম্বল দোকানে আগুন লাগিয়ে দিল। ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে বিজেপির যোগসাজশ রয়েছে। সঠিক তদন্ত হলে এর প্রমাণও পাওয়া যাবে। ওদের সামনে আসার ক্ষমতা নেই, তাই পিছন থেকে এই সমস্ত করে আমাকে আটকে দেবে ভাবছে।'


সন্ত্রাসের অভিযোগ...
এবার পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পেশ নিয়ে বেনজির অশান্তির সাক্ষী থেকেছে বাংলা। গত ১৫ জুন ছিল মনোনয়ন পেশের শেষ দিন। তার পর, নানা জেলা থেকে এসেছে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ। যেমন, বারুইপুরে মনোনয়ন প্রত্যাহারে বিজেপি প্রার্থীকে চাপ দেওয়া অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। রাজি না হওয়ায় প্রার্থীর স্বামীকে বাইক থেকে নামিয়ে, মাঠে নিয়ে গিয়ে বাঁশ, রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে আবার, নদিয়ার চাপড়ায় সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতে ঢুকে মারধরেও অভিযুক্ত তৃণমূল। বাম প্রার্থীর পরিবারের ৫ জন হাসপাতালে ভর্তি। পরিবারের দাবি, ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ চাপড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী সাহাজুদ্দিন শেখ। অভিযোগ, এক সিপিএম কর্মীকে মারধরের প্রতিবাদ করায়, তৃণমূলের রোষের মুখে পড়ে বাম প্রার্থীর পরিবার। রাতে তৃণমূলের দুষকৃতীরা সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর করে। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর ১ নম্বর এবং কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েত এলাকায় সিপিএম এবং আইএসএফ কর্মীরা আবার আর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনেন। তাঁদের দাবি, গভীর রাতে বাড়িতে সিভিক ভলান্টিয়ার পাঠিয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল, এমনই জানান তাঁরা!