খাতরা (বাঁকুড়া):'গত লোকসভায় ১৮টি আসন দিয়েছিলেন, ডাবল হলেই পড়ে যাবে তৃণমূল সরকার (TMC Government)', বাঁকুড়ার (Bankura) খাতরা থেকে এবার ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির (BJP) পারফরম্যান্স মনে করিয়ে হুঙ্কার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। সঙ্গে নাম না করে কটাক্ষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বললেন, '২০১৮-য় ভোটে পর্যবেক্ষক ছিল ভাইপো, তাঁর হয়ে দেখাশোনা করত বিনয় মিশ্র।' আরও অভিযোগ, 'একদিকে চুরি, অন্য দিকে পুলিশকে হাতে নিয়ে গণতন্ত্রের সর্বনাশ করছে তৃণমূল। জোর করে নির্বাচনে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি। এর জবাব দিতে হবে।' রাজ্যকে যে চোরমুক্ত করাই এবারের নির্বাচনে বিজেপির অঙ্গীকার, খাতরার সভা থেকে সেই হুঙ্কারও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। 


টানা সমালোচনা...
গত কাল নয়াগ্রামের প্রচারে বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, 'এখানে মানুষ তিতিবিরক্ত, তৃণমূলের চোরদের তাড়াতে চায়। এখানকার মানুষ আরও গরিব হচ্ছে ওড়িশায় গিয়ে কাজ করতে হয়। বাংলায় কাজ পায় না। আর ব্যাপক দুর্নীতি। তৃণমূলের নেতারা শুধু চাকরি লুঠ নয়, আবাস যোজনা শৌচালয়ের টাকা লুঠ করেছে। কুড়মি তফসিলিদের এখনও মাটির বাড়ি ভর্তি। গ্রামে একটা পাকা বাড়ি হলে সেটা তৃণমূল নেতার। ওদের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে।' পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও তীব্র আক্রমণ করেন বিরোধী দলনেতা। বলেন, 'কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী আটকাতে লজ্জার মাথা খেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল, যেটা কোনও দিন হয়নি। কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নিরপেক্ষ। তারা যত ফোর্স পাবে, নিরপেক্ষ ভোট হবে। তত তারা খুশি হবে। কিন্তু এই কমিশন বাহিনী আটকাতে দিল্লি গিয়েছিলেন।' নাম না করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গেও দলনেত্রী ও ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নেন শুভেন্দু। বলেন, 'পিসি ভাইপোর ব্যাপার। চুরির লাইসেন্স রিন্যুয়াল করতে হবে। এটা পঞ্চায়েত নির্বাচন নয়। মাল তোলার লড়াই।' তবে আজ যে ভাবে শেষ লোকসভা ভোটের প্রসঙ্গ তাঁর মুখে ফিরে এসেছে, তাতে অন্য রাজনৈতিক তাৎপর্য পাচ্ছেন অনেকেই।


নাগাড়ে হিংসা...
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক হিংসার অভিযোগ উঠেছিল। ঠিক তার পরের বছর, সাধারণ নির্বাচনে, ১৮টি লোকসভা আসন জেতে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ব্যাপক হিংসা হয়েছিল, তার ছাপ পড়েছিল ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে। এই বছর মনোনয়ন পর্ব থেকেই ব্যাপক হিংসার অভিযোগ উঠেছে। ভোটে শেষমেশ কী হবে, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তবে শুভেন্দুর মন্তব্য যে এই মুহূর্তে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, সে ব্যাপারে একমত রাজনৈতিক মহল।   


আরও পড়ুন: