কলকাতা: আর কয়েকদিন বাদেই পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election 2023)। কোন দিকে ঝুঁকে গ্রামবাংলা? ভোটের আগে সেই মেজাজের আঁচ পেতে সমীক্ষা (C Voter Opinion Poll) চালিয়েছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সংস্থা C Voter। তাতে প্রশ্ন করা হয়, মালদা জেলা পরিষদে (Malda Zilla Parishad) এবার কার ভাগে কটি আসন যেতে পারে? জনমত সমীক্ষায়  উঠে এসেছে, মোট ৪৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেতে পারে ২৪-৩২টি আসন। বিজেপি পেতে পারে ৪-৮টি আসন। বাম-কংগ্রেসের ঝুলিতে যেতে পারে ৭-৯ টি আসন। তবে একথা মনে রাখা দরকার, সমীক্ষা কখনও ধ্রুবসত্য নয়। কখনও তা মেলে, কখনও ফলাফলের পূর্বাভাস দিতে একেবারে ব্যর্থ হয়, কখনও তার সাফল্যের হার মাঝামাঝি থাকে। তাই চূড়ান্ত ফলের সকলকে অপেক্ষা করতেই হবে ১১ জুলাই পর্যন্ত। 


কী ভাবে সমীক্ষা?
২০টি জেলা পরিষদের ৯২৮টি আসনের ১০ হাজার ৫৪৮ জনের উপর এই জনমত সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। গত ১৫ জুন থেকে ২৬ পর্যন্ত সমীক্ষা চলে। শেষ পঞ্চায়েত ভোটে মালদা জেলা পরিষদে আসন ছিল ৩৮। যার মধ্যে ৩০টি গিয়েছিল তৃণমূলের ঝুলিতে, ৬টি পায় বিজেপি। কংগ্রেস জিতেছিল ২টি আসন। সিপিএম খাতা খুলতেই পারেনি। তবে এবার ছবিটা একটু অন্য রকম হতে পারে, ধারণা বিরোধী শিবিরের বড় অংশের। বিশেষত, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জল্পনা যে জেলায় সবথেকে বেশি, তার নাম মালদা। গত মার্চেই যেমন পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী বাছাই ঘিরে মালদার হরিশচন্দ্রপুরে প্রকাশ্যে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। ব্লক নেতৃত্বের সামনে দুই পক্ষের বচসা বেধেছিল দু'পক্ষের। নেতাদের দিকে তেড়ে যান কর্মীরা। তবে, সেখানকার জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী ও চেয়ারম্যান সমর মুখোপাধ্যায়কে বহিষ্কারের দাবি তুলে রতুয়া এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির স্বামী মোহাম্মদ হেসামুদ্দিন যে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন, সেটি অনেকেই ভুলতে পারেননি। বলেছিলেন, 'এই জেলা তৃণমূল সভাপতি এবং চেয়ারম্যানকে যদি বাতিল করা না হয়, বহিষ্কার না করা হয় তাহলে একমাস পরে আমরা ভাবব কী করব। মালদায় তৃণমূল কংগ্রেসকে মামা ভাগ্নে বিক্রি করে দিতে চায়। মালদায় যে পঞ্চায়েতগুলোতে অনাস্থা হয়েছে, সেখানে যার বিরুদ্ধে অনাস্থা এবং যাকে গঠন করবে তার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে। এরা টাকার দুর্নীতিতে ডুবে গেছে। এদের যদি দল থেকে বহিষ্কার করা না হয় তাহলে মালদা জেলায় তৃণমূলের রেজাল্ট ভালো হতে পারে না।' জবাবে জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, 'কী কোথায় কী বলে বেড়াচ্ছে, তার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না। কে কোথায় কী বলে বেড়াচ্ছে, সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। দলটা নিজস্ব গতিতে চলছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের রেজাল্ট প্রমাণ করে দেবে যে, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছে।' 
সত্যিই কী হবে সেটি অবশ্য ১১ জুলাইয়ের আগে জানা সম্ভব নয়। তবে একটি জিনিস উঠে আসছে। ২০১১ সালে যখন রাজ্যে পরিবর্তনের ঝড় আসে, তখনও মালদায় বিশেষ ছাপ ফেলতে পারেনি তৃণমূল। ২০১৬ সালেও কম-বেশি ছবিটা ছিল একই রকম। শেষ বিধানসভা ভোটেই সেখানে সাফল্যের স্বাদ পায় তৃণমূল। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে সেই সাফল্য ধরা থাকবে নাকি অন্য কোনও ছবি ধরা পড়বে? বলবে সময়।        


আরও পড়ুন:তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের গ্রেফতারি কি প্রভাব ফেলবে পঞ্চায়েত ভোটে? কী বলছে সি-ভোটারের সমীক্ষা?