নয়া দিল্লি: আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার অরবিন্দ কেজরিওয়াল, রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে স্থগিত রায়দান। অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ১০ দিনের হেফাজতে চায় ইডি। 


আবগারি দুর্নীতির টাকা উদ্ধার করতে হবে, আদালতে সওয়াল ইডির। সূত্রের খবর, আদালতে ইডি দাবি করেছে আবগারি দুর্নীতির মাথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ইডি সূত্রের খবর, মদের লাইসেন্স পাইয়ে দিয়ে ৪৫ কোটি টাকা পেয়েছিল আপ সরকার। ২০২২ সালে গোয়া বিধানসভা ভোটে এই ৪৫ কোটি টাকা ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে দাবি। গোয়ায় আম আদমি পার্টির ৪০ জন প্রার্থীর মধ্যে এই টাকা পেয়েছিলেন ১৩ জন, ইডি সূত্রে খবর।


আদালতে ইডি সওয়াল করে, আম আদমি পার্টি কোম্পানি ছাড়া আর কিছু নয়, সুতরাং কোম্পানির জন্য দায়ী আপ-এর সবাই। ভারতের ইতিহাসে চেয়ারে থাকাকালীনই প্রথম কোনও মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার, আদালতে সওয়াল কেজরিওয়ালের আইনজীবীর। 'অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারির কোনও প্রয়োজন নেই, ইডিই এখন বিচারক, ইডিই এখন শাস্তিদানকারী', আদালতে সওয়াল কেজরিওয়ালের আইনজীবীর।


সারাদিন বিক্ষোভ:
আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি ঘিরে ভোটের মুখে তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আপ সমর্থকরা। সূত্রের খবর, কেজরিওয়ালকে যাতে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে পাওয়া যায়, তার প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ১০০ কোটি টাকার ঘুষের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরে লকআপেই রাত কাটিয়েছেন কেজরিওয়াল। রাতে তাঁকে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। দুপুর দুটো নাগাদ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে পেশ করা হবে কেজরিওয়ালকে। দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গতকালই আম আদমি পার্টির প্রধানকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। লোকসভা ভোটের ঠিক আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারির প্রতিবাদে রাজধানী জুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আম আদমি পার্টির নেতাকর্মীরা। চলছে দিল্লি পুলিশের ধরপাকড়। 


 



গতকাল থেকে কী কী ?


আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। গতকালই রক্ষাকবচ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন আম আদমি পার্টির প্রধান। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে কেজরি-মামলার শুনানি হবে। এদিন সকালে কেজরিওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি প্রথমেই সুপ্রিম কোর্টের কোর্ট নম্বর ওয়ানে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের দ্বারস্থ হন।  সেখানে তিনি বলেন, 'রাতেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেভাবে চলছে, প্রথম ভোট হওয়ার আগেই অনেক বিরোধী নেতা হয়তো গ্রেফতার হয়ে যাবেন।' জবাবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'এধরনের কেসের জন্য এখন কোর্ট নম্বর দুইয়ে তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ বসেছে। সেখানে গিয়ে বলুন।'


সুপ্রিম কোর্টের কোর্ট নম্বর দুইয়ে তখন আবগারি দুর্নীতি মামলায় ধৃত কেসিআর-কন্যা কে কবিতার শুনানি চলছিল। তাঁর হয়ে সওয়াল করছিলেন কপিল সিব্বল। কেজরিওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি যখন কোর্ট নম্বর দুইয়ে পৌঁছন, তার কিছুক্ষণ আগেই উঠে যায় তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। তখন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না সহ দুই বিচারপতির বেঞ্চ বসেছিল। 


অভিষেক মনু সিংভি জানান, প্রধান বিচারপতি তাঁকে এখানে পাঠিয়েছেন। জবাবে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, 'এধরনের কেস তো তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ শুনবে। এটা তো দুই বিচারপতির বেঞ্চ'। অভিষেক মনু সিংভি বলেন, 'প্রধান বিচারপতিই তাঁকে আসতে বলেছেন। তা শুনে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, 'ঠিক আছে, আগের কেসগুলো শুনেনি। তারপর আপনার কেস শোনার জন্য আবার তিনজনের বিশেষ বেঞ্চ বসবে। '


তখন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, 'আমরা ক্যাভিয়েট ফাইল করে রেখেছি। এই কেসে আমাদের বক্তব্যও যেন শোনা হয়।' বিচারপতিরা তাতে সম্মত হন। 


আরও পড়ুন: প্রথমবার UPSC দিয়েই সারা ভারতে ব়্যাঙ্ক ৯৪, কীভাবে সফল হলেন তমালি?