কুশমণ্ডি: ধর্ম নয়, নির্বাচন হোক উন্নয়নের নামে, কুশমণ্ডিতে প্রচারে গিয়ে এমনই সুর তুললেন তৃণমূলের লোকসভা প্রার্থী তথা তারকা প্রচারক দেব। মঙ্গলবার দলের প্রার্থী দীপক মিত্রের হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন তিনি। প্রচার মঞ্চ থেকে প্রতিপক্ষের সুকান্ত মজুমদারকে শুভেচ্ছাই জানান দেব। কিন্তু ধর্মের নামে নয়, কাজের ভিত্তিতে ভোটদান করা উচিত বলে এদিন সাধারণ মানুষকে বার্তা দেন তিনি। (Dev in Kushmandi)
প্রতিপক্ষের আক্রমণে বার বার বিদ্ধ হতে হলেও, তিনি কাউকে খারাপ কথা বলার পক্ষপাতী নন বলে সভার শুরুতেই এদিন জানিয়ে দেন দেব। জানান, সুকান্তকে তিনি পছন্দ করেন। তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। কিন্তু দেব জানান, রাজনীতির ময়দানে যে-ই নামুন না কেন, মানুষ যাঁকে ভালবাসবেন, বিশ্বাস করবেন, তাঁরই জয় হওয়া উচিত। (Dev Election Campaign)
তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে ভোট চাইতে গিয়ে দেব বলেন, "আমার দলকেই ভোট দিতে হবে আমি বলছি না। কিন্তু ভোট দেওয়ার আগে একটু ভাববেন। আপনারা কাকে বিশ্বাস করবেন, যিনি জুমলা দিয়ে চলে যান, নাকি যিনি কথা দেন, নির্বাচন জেতেন এবং সেই কথা রাখেন? আজকের দিনে রাজনীতি ধর্মনির্ভর হয়ে গিয়েছে। যে দল কাজ করে না, ধর্মকে এগিয়ে দেওয়াই তাদের কাছে সহজ উপায়। ধর্মকে এগিয়ে দিয়ে বাকি সব কিছু ভুলিয়ে দেওয়া হয়। মানুশও ধর্ম এলে সব ভুলে যান। কিন্তু এই নির্বাচন তো ধর্ম নিয়ে নয়! এই নির্বাচন স্কুল, হাসপাতাল, রাস্তা গড়া, উন্নয়নের নির্বাচন।"
সরাসরি যদিও বিজেপি-র নাম মুখে আনেননি দেব। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, "এখন নির্বাচন হয়ে গিয়েছে, জিতলে কেউ মন্দির গড়বেন, কেউ গড়বেন মসজিদ। এতে কি তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণ হবে? আমাদের সরকার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছে, তাতে হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা মেলে, ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন পড়াশোনা করতে পারে যাতে, তার জন্য় স্মার্টফোন কেনার টাকা দেওয়া হয়, মেয়েরা কন্য়াশ্রী পান, মা-বোনেরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান, সবুজ সাথী সাইকেল, ১০ লক্ষের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়। এখানে সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, সরকারে কলেজ গড়েছে আমাদের সরকার। তাহলে কাকে ভোট দেবেন, যে হাসপাতাল, স্কুল তৈরি করবে তাকে, নাকি যারা মন্দির-মসজিদ বানায়?"
প্রকাশ্যে সভায় দাঁড়িয়ে দেব জানান, তিনি রাজনীতি তেমন বোঝেন না। কিন্তু মানুষের জীবন-জীবিকার পরিবর্তে রাম-রহিম, মন্দির-মসজিদ কেন নির্বাচনের ইস্যু হবে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। দেব জানান, নির্বাচনের আগে ধর্মের বিষ ঢেলে দেওয়া হচ্ছে চতুর্দিকে। কিন্তু তাঁদের সরকার হিন্দু-মুসলিম না করে এত বছর কাজ করে গিয়েছে। চাইলে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্য পেয়ে তিন বছর হেসেখেলে কাটাতে পারতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কিন্তু জেতার তিন মাসের মধ্যে তিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পৌঁছে দেন মানুষের কাছে। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে দেবের আর্জি, দেশকে ভালবাসলে, এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে ধর্মের নামে ভোট দেওয়া উচিত নয়, তাতে ধর্ম জিতে যাবে, হাসপাতাল, শিক্ষা. কর্মসংস্থান হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা থেকে ভূরি ভূরি প্রতিশ্রুতি দিলেও, আজ পর্যন্ত একটি কাজও করে দেখাতে পারেনি, মমতা করে দেখিয়েছেন, তাই মানুষকেই বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানান দেব।