কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election 2023) আগে বেলাগাম সন্ত্রাস রাজ্যে, গত ২৪ দিনে ১৫ জন মারা গিয়েছেন। তবু রাজ্য পুলিশের ডিজি (DGP) মনোজ মালব্যের (Manoj Malaviya) দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এদিন পুলিশকর্তার এমন মন্তব্য়ের প্রধান বিতর্কের ঝড় রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, 'মুখ্যমন্ত্রী এক কথা বলেছেন। এবার ডিজি-র মুখেও এক কথা।'
কী বলললেন পুলিশকর্তা?
'ওপর থেকে নির্দেশ রয়েছে, কোনও হিংসা বরদাস্ত হবে না। আপনাদের মনে হচ্ছে, বাংলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে?' সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করেন ডিজি মালব্য। এতেই শেষ নয়। সঙ্গে সংযোজন, 'কিছু ঘটনা ঘটেছে। ভোটের সময় ছাড়াও এসব ঘটনা ঘটে।' তবে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে, দাবি তাঁর। এক কথা বললেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর মতে, ষড়যন্ত্র করে বাংলার পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের আক্রমণ, আক্রান্তের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজাচ্ছে পুলিশ। বিরোধীদের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। কটাক্ষ এসেছে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের তরফেও। কম-বেশি, সকলেরই প্রশ্ন এক। যেখানে রাজ্যে ২৪ দিনে ১৫ জনের প্রাণ গিয়েছে, আজও দিকে দিকে অশান্তির খবর আসছে, সেখানে রাজ্য পুলিশের এমন দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত?
সংঘর্ষ দিকে দিকে...
কখনও মুর্শিদাবাদ, কখনও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। দিকে দিকে অশান্তির অভিযোগ থামছে না কিছুতেই। এদিন যেমন মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে বোমা বাঁধতে গিয়ে জখম হয় ২ দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি বোমা
উদ্ধার হয়। কাদের নির্দেশে বোমা বাঁধা হচ্ছিল? খতিয়ে দেখা হচ্ছে, দাবি পুলিশের। অন্য দিকে, তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি। হেলিয়াগাছিতে আইএসএফ কর্মী- সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ইট, খালি সোডার বোতলও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। হটুগঞ্জ বাজারেও আইএসএফ কর্মীদের দোকান ভাঙচুর করা হয় বলে খবর।ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। আসেন মন্দিরবাজারের এসডিপিও ও কুলপি থানার ওসি। হামলায় তাদের বেশ কয়েকজন সমর্থক জখম হয়েছেন বলে দাবি আইএসএফের। কুলতলিতে আবার তৃণমূল প্রার্থীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ। তৃণমূল প্রার্থীর দাবি, গুলি ডান হাঁটুর ওপরের অংশ ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। অভিযোগের তির বামেদের দিকে। শান্ত হয়নি বাসন্তীও। রাজ্যপাল ফিরে যেতেই ফের গুলি চলে সেখানে, আহত হন এক তৃণমূলকর্মী। বাসন্তীতেই আবার বিজেপি প্রার্থী ও কর্মীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। সব মিলিয়ে তালিকাটা ছোট নয়। এর মধ্যে রাজ্য পুলিশকর্তার এমন দাবিতে বিস্ময় ও বিতর্ক রাজনৈতিক মহলে।