কলকাতা: আসন বদলে গিয়েছিল। নতুন আসনে প্রচার করেছেন। তবুও ভোটের লড়াইয়ে হেরে গিয়েছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh Defeat)। তারপরেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য় দিলীপ ঘোষের। ফল বেরনোর দিনই এবিপি আনন্দে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর গলায় শোনা গিয়েছিল ক্ষোভের সুর। দলাদলি ও 'কাঠিবাজি'র কারণে হার হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আসন বদল নিয়েও তাঁর গলায় ছিল উষ্মা। ফের দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। ভোটে হেরে দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফের বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ


দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন, 'মেদিনীপুর (Medinipur) থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না প্রমাণ হয়ে গেছে।' বাংলায় দলের সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, 'বাংলায় সংগঠন শুয়ে পড়েছিল, গ্রামে গ্রামে গিয়ে সংগঠন তৈরি করেছিলাম। দলের সবাই আমার পক্ষে ছিল। দলের সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না প্রমাণ হয়ে গেছে।' প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের দাবি, 'সংগঠনের দুর্বলতা ছিল, প্রমাণ হয়ে গেছে, তাই ভোট কমেছে।'


হারা আসনে প্রার্থী করা হয়েছিল। নেতৃত্ব ও নীতির জন্য় হেরেছেন। লোকসভা ভোটে হেরে দলের রাজ্য় নেতৃত্বকে নিশানা করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এমনকী চক্রান্তের অভিযোগেও তুললেন তিনি। দিলীপ ঘোষের মন্তব্য়ে শোরগোল দলের অন্দরে।  


আগের  দিন দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'রাজনীতিতে চক্রান্ত, কাঠিবাজি এটা রাজনীতির অঙ্গ। আমি সেই ভাবেই নিয়েছি। আমি পুরো রাজনীতিতে যা হয়, সবাই কাঠি নিয়ে ঘুরতে থাকে।' তিনি গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজপির ঐতিহাসিক জয়ের রূপকার! কিন্তু, তারপর থেকেই তাঁর ক্ষমতা খর্ব করা থেকে শুরু করে অবশেষে তাঁর জেতা আসনও বদলে দেওয়া। পাঠিয়ে দেওয়া কঠিন আসনে! আর শেষ অবধি বর্ধমান দুর্গাপুর আসনে তৃণমূলের কাছে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৯৮১ ভোটে হারতে হয়েছে দিলীপ ঘোষকে। দিলীপ ঘোষকে তাঁর মেদিনীপুর আসন থেকে সরিয়ে, সেই জায়গায় যাঁকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। সেই অগ্নিমিত্রা পাল তৃণমূলের জুন মালিয়ার কাছে ২৭ হাজার ১৯১ ভোটে হেরে গেছেন। এখন প্রশ্ন যে খড়গপুর, মেদিনীপুর থেকে দিলীপ ঘোষের সংসদীয় রাজনৈতিক জীবনের শুরু। সেখান থেকে তাঁকে কেন সরানো হল? নেপথ্য়ে কার হাত? দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, 'ভূমিকা তো থাকেই পার্টির। কার ভূমিকা আমি জানি না। খোঁজ করারও কথা নয়। পার্টি বলেছে, আমি শৃঙ্খলাবদ্ধ কর্মী। আমায় পার্টি ইলেকশন লড়তে বলেছে, আমি লড়েছি, জিতেছি- তখন অনেককিছু আমার হাতে ছিল। এখন খালি লড়াইটা আমার হাতে ছিল।'


অনেক কষ্টে বিষ্ণুপুর লোকসভা আসন ধরে রেখেছেন সৌমিত্র খান। তিনি বলেছিলেন, 'হঠাৎ করে আসনগুলো পরিবর্তন হল। আসন পরিবর্তন, একটা মানুষ যখন একটা জায়গায় দাঁড়ায় সেখানে তাঁর ৭ শতাংশ ৮ শতাংশ ভোট তাঁর ওখানে তৈরি হয়ে যায়। হঠাৎ করে ধরুন যদি আমাকে এখান থেকে পরিবর্তন করে দিত তাহলে.....। নিশ্চিতভাবে দিলীপদার মেদিনীপুরে থাকলে দিলীপদা মেদিনীপুরে জিততেন।' সৌমিত্র নিশানা করেছিলেন রাজ্যের দলের নেতাদের একাংশকে। অভিযোগ করেছিলেন, দলের একাংশের সঙ্গে তৃণমূলের বোঝাপড়া রয়েছে। সেই একই সুর শোনা গিয়েছিল দিলীপ ঘোষের গলাতেও। তিনি বলেন, 'আমাদের ব্য়ক্তিগত রেষারেষি, ভুল বোঝাবুঝি, ভুল নীতির জন্য় এত হাজার হাজার কর্মীর পরিশ্রম যেন জল হয়ে না যায়। তাহলে পরবর্তীকালে তাদেরকে কাজে লাগানো খুব মুশকিল হয়ে যাবে। মানুষেরও পার্টির প্রতি আস্থা চলে যাবে নেতৃত্বের প্রতি। কোথাও না কোথাও ফাঁক থেকেছে। লড়াই সেভাবে হয়নি। সব কর্মীরা নামেনি। এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করার দরকার আছে। গতি যেন রুদ্ধ না হয়ে যায় তাহলে তো কর্মীরা হতাশ হয়ে যাবেন।'


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: জেতা আসন বদলের পিছনে কলকাঠি কার? হারের পরে মুখ খুললেন দিলীপ