কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: মালা বিতর্কের হাত ধরে পুনরাবৃত্তি হল ইতিহাসের। ৩ বছর ৪ মাস পর বাঁকুড়ার স্মৃতি ফিরল পূর্ব বর্ধমানে।  ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর বঙ্গ সফরে এসে, বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের পুয়াবাগানে বিরসা মুন্ডা স্মরণে একটি মূর্তিতে ফুল দেন অমিত শাহ। আদিবাসী সমাজের একাংশ দাবি করে, মূর্তিটি বিরসা মুন্ডার নয়, এক আদিবাসী শিকারির। ফের মূর্তিতে মালা দেওয়া নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ল বিজেপি। রবিবাসরীয় সকালে বর্ধমান শহরে প্রচার করেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। সেখানেই ঘটে এই ঘটনা। 


' কপূর এল কোথা থেকে?' 
দিলীপ ঘোষ মুখ খুললেই বিতর্ক। এবার  মালা দিয়ে বিতর্কে। রবিবার তিনি প্রাতর্ভ্রমণে যান বর্ধমানের মোহনবাগান মাঠে। কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। পুজো দেন রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে। রাজবাড়ির কাছে সোনাপট্টি এলাকায় যোগ দেন চা-চর্চায়। এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল। গোল বাধে সোনাপট্টির একটি মূর্তিতে মালা দেওয়ার সময়। রাজা ভেবে অন্যের মূর্তিতে মালা দিয়ে বসেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, মহারাজ উদয়চাঁদ অমর রহে। এরপরই ধরা পড়ে যায় ভুল। যখন চোখ পড়ে নামফলকে। ভুল ভাঙে সকলের। ইনি তো মহারাজ উদয়চাঁদ নয় ! এ মূর্তি বনবিহারী কপূরের। মালা দেওয়ার পর ভুলটি নজরে আসে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন বিজেপি প্রার্থী। প্রশ্ন করে বসেন, এখানে কপূর এল কোথা থেকে?  


কে এই বনবিহারী কপূর?
জেলার ইতিহাসবিদরা বলছেন, গলসির বাসিন্দা ওই ব্যক্তি ছিলেন রাজ পরিবারের জ্যোতিষী। রাজা আফতাব চাঁদের কোনও সন্তান না থাকায় তিনি বনবিহারীর ছেলে বিজয়চাঁদকে দত্তক নেন। নাবালক অবস্থায় বিজয়চাঁদের রাজ্যাভিষেক হয়। তখন এস্টেট অফিসার হিসেবে কাজ করতেন রাজার বাবা বনবিহারী। তাঁর মৃত্যুর পর মূর্তি বসানো হয় রাজ পরিবার চত্বরে।


দিলীপের মূর্তি-ভ্রান্তি
দিলীপের এই ভ্রান্তি নিয়েই ফের শুরু রাজনৈতিক তরজা। বর্ধমানের মহারাজা ভেবে অন্য মূর্তিতে মালা দেওয়ায় বিজেপি প্রার্থীকে তীব্র কটাক্ষ করে তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন,  ' দিলীপবাবু মেদিনীপুর থেকে বর্ধমানে এসেছেন। ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বর্ধমান সম্পর্কে কিছু জানেন না। বর্ধমানের ইতিহাস সম্পর্কে কিছু জানেন না। আর দিলীপবাবু কী বলবেন, যিনি গরুর দুধের মধ্যে সোনা পান, তিনি তো বনবিহারী কপূরকে বর্ধমানের রাজা বলে চালিয়ে দিতে পারেন।       


আরও পড়ুন :


এবার কোন ইস্যু নির্ণয় করবে পাহাড়ের ভোট-ভাগ্য? ১৫ বছরের জয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারবে BJP?