কলকাতা: মহাসমারোহে জোট হয়েছিল। কিন্তু ফল বেরোতে দেখা গেল প্রাপ্তির ভাঁড়ার কার্যত শূন্য। বাংলার নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে ভোটগ্রহণ হয়েছে ২৯২টি আসনে। আর তার মধ্যে সংযুক্ত মোর্চার ঝুলিতে এল মাত্র একটা আসন। ভাঙড় থেকে জয়ী হয়েছেন সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী। ফাঁকা হাত কংগ্রেস এবং বামেদের। আর বাংলার ভোটে বামেদের ভরাডুবির পর বিবৃতি জারি করল সিপিএমের পলিটব্যুরো।
বিবৃতিতে পলিটব্যুরো লিখেছে, বাংলায় বড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। বাংলার মানুষ স্পষ্ট ভাবে ধর্মীয় মেরুকরণের মতাদর্শকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সংযুক্ত মোর্চা ও বামেদের ফল হাতাশাজনক। মেরুকরণের কারণেই সংযুক্ত মোর্চা কোণঠাসা হয়েছে। দলে হারের পর্যালোচনা থেকে শিক্ষা নেওয়া হবে।
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে জোট হয়েছিল বাম এবং কংগ্রেসের। সেবারে প্রত্যাশিত ফল হয়নি। এবার আইএসএফ যোগ দিয়েছিল জোটে। আশা ছিল হাল ফিরবে। কিন্তু এবার আরও ধরাশায়ী পরিস্থিতি তিন দলের জোট সংযুক্ত মোর্চার। মাত্র একটি আসন পেয়েছে সংযুক্ত মোর্চার সমর্থিত আইএসএফ।
বরাবরই মালদা, মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত। কিন্তু সেখানেও এবার দাঁত ফোটাতে পারল না অধীর শিবির। সারা রাজ্যের মতো ওই দুই জেলাতে উল্লেখযোগ্য ফল এবার তৃণমূলের। রাজ্যের ইতিহাসে এই প্রথম যে জোট করেও একটা আসনও পেল না কংগ্রেস বা বাম।
ঠিক ৫ বছর আগে শেষবার বিধানসভা ভোট দেখেছিল বঙ্গবাসী। তারপর ২১-এর মহারণ। ওই ভোটে বাম কংগ্রেস জোট ৭৭টি আসনে জিতেছিল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফলের নিরিখে কংগ্রেস ৯টি আসনে এগিয়ে ছিল। বামেরা একটিও আসনে এগিয়ে ছিল না। কিন্তু এবার একসঙ্গে তিন দলের জোটে সেই ছবির আমূল পরিবর্তন হল।
শ্রমজীবি ক্যান্টিন থেকে আমফান দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো, দেখা গিয়েছিল তাদের। আবার নির্বাচনের আগে আব্বাস সিদ্দিকি থেকে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের ঝাঁঝালো বক্তৃতা মন কেড়েছে অনেকেরই। দুর্নাম ঘুচিয়ে তরুণ মুখদেরও প্রার্থী করেছিল সিপিএম। কিন্তু ইভিএমে তার প্রভাব যে বিন্দুমাত্র পড়ল না, তা ফলেই স্পষ্ট। আর এই হারের জন্য মেরুকরণের রাজনীতিকেই দুষছেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বরা।