নন্দীগ্রাম : নন্দীগ্রামে তিনি জিতেছেন না হেরেছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল না সন্ধেতেও। সংবাদসংস্থা ANI একসময় জানিয়ে দেয় শুভেন্দু অধিকারীকে হারিয়ে নন্দীগ্রামে জিতেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১২০০ ভোটের ব্যবধানে। পরে সময় আর একটু গড়াতে জানা যায়, হেরে গিয়েছেন তিনি। ১৭৩৬ ভোটে। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে এখনও এব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
অপেক্ষার অবসান। বহু চর্চিত ও নজরকাড়া আসন নন্দীগ্রামে হারলেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরতে পরতে উত্তেজনা। প্রথম কয়েক রাউন্ডে এগোতে থাকেন শুভেন্দু। এরপর থেকেই বদলে যায় পাশা। লিড নেন মমতা। ১৬ রাউন্ড শেষেও পরিষ্কার হচ্ছিল না ছবিটা। হাফ লাখ ভোটে মমতাকে হারানোর কথা বলেছিলেন শুভেন্দু।
নন্দীগ্রাম। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন। এবং এর গোটা প্রেক্ষাপট। কোনও রাজনীতি-নির্ভর সিনেমা স্ক্রিপ্টের থেকে কম চিত্তাকর্ষক নয়। যার উপর নজর ছিল গোটা দেশের। সৌজন্যে - মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য-রাজনীতির অন্যতম দুই প্রধান মুখ। একসময়ের রাজনৈতিক সহকর্মীও।
দুজনের সম্পর্কে তাল কাটে ভোটের আগে আগে। মাঠে ময়দানে থেকে রাজনীতি করা শুভেন্দুকে দলে ধরে রাখতে কম চেষ্টা হয়নি তৃণমূলের তরফে। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। মেদিনীপুরের সভায় অমিত শাহর হাত থেকে বিজেপির পতাকা তুলে নেন শুভেন্দু। দলের একসময়ের সেনাপতির দলবদল হজম করতে পারেননি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
সেই শুরু চ্যালেঞ্জের। বরাবরের লড়াকু রাজনীতিক মমতা আর পিছিয়ে আসতে চাননি। কার্যত মমতা-শুভেন্দুর সরাসরি লড়াইয়ের আবহ তৈরি হয়ে যায়। তাতে সিলমোহর দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে তেখালি মাঠের সভা থেকে নন্দীগ্রামের আসনে লড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন মমতা। অন্যদিকে শুভেন্দুর চেনা ময়দান নন্দীগ্রামে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। হাই প্রোফাইল এই আসনে ভোটের আগেও একাধিক ঘটনা সংবাদমাধ্য়মের শিরোনামে উঠে আসে।
নন্দীগ্রামে অপেক্ষাকৃত অচেনা মাটি ছিল সংযুক্ত মোর্চার মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের। প্রচারে অবশ্য তিনি সাড়া ফেলেন। মানুষের নিত্য সমস্যার কথা বারবার তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। কিন্তু, জমি আন্দোলন-পর্ব সম্ভবত এখনও ভুলে উঠতে পারেননি নন্দীগ্রামবাসী। তাই শিকে ছেঁড়েনি তাঁর।
শেষ পর্যন্ত প্রেস্টিজ ফাইটে শেষ হাসি হাসলেন শুভেন্দু অধিকারী।