সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: গণনাকেন্দ্রের (Polling Centre) মধ্যেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে নির্দল প্রার্থীর জয়ের শংসাপত্র কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রার্থীর (TMC Candidate) অনুগামীদের বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) বাদুড়িয়ার বাগজোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের খাজরা গ্রামের ঘটনা। প্রতিবাদে গ্রামে মিছিল নির্দল প্রার্থীর সমর্থকদের।অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল প্রার্থীর দাবি, প্রশাসন তাঁকেই জয়ী বলে সার্টিফিকেট দিয়েছে।



কী ঘটেছিল?

ব্যালট ছিনতাই। ব্যালট বক্স নিয়ে দৌড়, ব্যালট গিলে ফেলা, গণনাকেন্দ্রের মধ্যেই ব্যালটে জল-কালি ঢেলে দেওয়া, পুড়িয়ে দেওয়া, পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে এমনই নানা অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে এবার, গণনাকেন্দ্রের মধ্যেই আগ্নেযাস্ত্র দেখিয়ে নির্দল প্রার্থীর জয়ের শংসাপত্র কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার বাগজোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। নির্দল প্রার্থীর দাবি, তিনি দুশো-র বেশি ভোটে জিতেছেন। অভিযোগ, এরপরই, গণনাকেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টকে মেরে বের করে দেয় তৃণমূল। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে কেড়ে নেওয়া হয় জয়ের শংসাপত্র। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি। প্রতিবাদে, রবিবার এলাকায় মিছিল করে জয়ী নির্দল প্রার্থীর অনুগামীরা। বাদুড়িয়ার বাগজোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী নির্দল প্রার্থী হীরামণি পিয়াদা বলেন, 'আমি নির্দল প্রার্থী। টিএমসির হযে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। পারিনি। তাই নির্দল হয়ে দাঁড়াই। 200-র বেশি ভোটে জিতেছি। টিএমসির মস্তান, গুণ্ডা নিযে আমার এজেন্টকে বের করে দেয়। আমার প্রাপ্য সার্টিফিকেট যেন ফিরিয়ে দেয়।' নির্দল প্রার্থীর এজেন্ট, শাহরুখ মণ্ডল বলেন, 'গণনাকেন্দ্রের ভিতরে ছিলাম।গণনা বাক্স আনার আগেই আমাকে বলছে, জানে বাঁচতে চাস, তো চলে যা। ২ ঘণ্টা পর আমাকে ব্যাপক মারে। পুলিশকে হাতে পায়ে ধরেছিলাম... বলল আমার কিছু করার নেই। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। প্রতিবাদে ধিক্কার মিছিল।' ভোট শেষ। কিন্তু এই অভিযোগের পর্ব কবে মিটবে? উত্তর অজানা। 

শংসাপত্র জমার নির্দেশ
হালেই পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ের শংসাপত্র দলের ব্লক সভাপতির কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। শনিবার কোচবিহারের দিনহাটায় ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার মঞ্চ থেকেই তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীদের উদ্দেশে এই বার্তা দেন উদয়ন। তিনি বলেন, 'দিনহাটা ব্লক ১-এর বীর যাঁরা আছেন, নব নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য, তাঁরা তাঁদের সার্টিফিকেটগুলো অনন্তর হাতে জমা দেবেন। আর দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের যাঁরা পঞ্চায়েত মেম্বার এবং পঞ্চায়েত সমিতির মেম্বার তাঁরা তাঁদের সবার সার্টিফিকেট নিজের নিজের অঞ্চল সভাপতির মাধ্যমে দীপক ভট্টাচার্যের কাছে আজকের মধ্যে জমা করবেন।'এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দেয় বিজেপি। কোচবিহার জেলা বিজেপি সভাপতি সুকুমার রায়ের কটাক্ষ, 'শাসকদলের এত ভয়? যারা জয়ী প্রার্থী তাদের সার্টিফিকেট নিয়ে নিতে হবে? তৃণমূলের নীচু তলার কর্মীরা কি উদয়ন গুহর কথা শুনছে না? বিরোধীদের ভয়ের কারণ থাকতে পারে, কিন্তু শাসকদলের কীসের ভয়?' বিজেপির কটাক্ষ, তৃণমূলের নিজেদের কর্মীদের উপর বিশ্বাস নেই। দলবদল আটকানোর চেষ্টা বলে তারা কটাক্ষ করেছে। যদিও বিজেপির দাবি উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। 


 


আরও পড়ুন:অমানবিক ! রাস্তায় নাচতে না চাওয়ায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণকে 'কটূক্তি, মারধর'