নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের মুখে গ্রেফতার করা হয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। সেই নিয়ে এবার পথে নামছে বিজেপি বিরোধী I.N.D.I.A জোট। আগামী ৩১ মার্চ দিল্লির রামলীলা ময়দানে একত্রিত হচ্ছেন জোটের নেতা-নেত্রীরা। কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সেখানে প্রতিবাদ জানাবেন তাঁরা। রবিবার I.N.D.I.A জোটের তরফে এই 'গণতন্ত্র বাঁচাও' কর্মসূচির ঘোষণা হল। (I.N.D.I.A Alliance)


দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ২১ মার্চ রাতে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আর্থিক তছরুপ মামলায় সরকারি বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয় কেজরিওয়ালকে। আপাতত ২৮ মার্চ পর্যন্ত ED হেফাজতে রয়েছেন কেজরিওয়াল। আর্থিক তছরুপ নিয়ে সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ED. (Lok Sabha Elections 2024)


ED-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ওই দিন রাতেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কেজরিওয়াল। পরে যদিও শীর্ষ আদালত থেকে আবেদন তুলে নেন তিনি। এর পর শনিবার দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানান কেজরিওয়াল। ED-র গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন জানান তিনি। কেজরিওয়াল জানান, তাঁকে বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আবগারি দুর্নীতির কোনও মামলায় কোনও যোগ নেই তাঁর। অবিলম্বে মুক্তি পাওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁর। (Arvind Kejriwal Arrest)



আরও পড়ুন: Udhayanidhi Stalin: ’২৮ পয়সার প্রধানমন্ত্রী’, নির্বাচনী প্রচারে মোদিকে কটাক্ষ উদয়নিধির


রবিবার জরুরি ভিত্তিতে শুনানি চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। কিন্তু আদালত জরুরি ভিত্তিতে শুনানিতে রাজি হয়নি। দোল কাটিয়ে বুধবার আদালত খুলবে। ওই দিনই কেজরিওয়ালের আবেদনের শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ দোলে জেলেই থাকতে হবে কেজরিওয়ালকে। এদিন জেল থেকেই সরকারি কাজকর্মের নির্দেশ দেন কেজরিওয়াল। তাঁর এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধেই এবার পথে নামছে I.N.D.I.A জোট।


আসন সমঝোতা নিয়ে বিরোধ থাকলেও, কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেন জোটের শরিক সব দলই। নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি জারি হয়ে যাওয়ার পর বেআইনি ভাবে একজন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে একযোগে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গাঁধী, শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব, এমকে স্ট্যালিনরা। 


এর পর, সোমবার একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন I.N.D.I.A জোটের দুই শরিক দল AAP এবং কংগ্রেস। সেখানেই ৩১ মার্চ পথে নামার কথা জানানো হয়। AAP নেতা গোপাল রাই বলেন, "গণতন্ত্র আজ বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে I.N.D.I.A জোটের শরিক দলগুলি 'মহামিছিলে' নামবে।গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে দেশে স্বৈরতন্ত্র চালানো হচ্ছে। এই স্বৈরাচারী সরকার কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছে। যে বা যাঁরা দেশের সংবিধান এবং গণতন্ত্রকে সম্মান করেন, আজ ক্ষোভে ফুঁসছেন সকলে। ভুয়ো মামলায় বিরোধীদের বন্দি করতে তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপব্যবহার করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।"


দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দ্র সিংহ লাভলি বলেন, "৩১ মার্চের 'মহামিছিল' কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, গণতন্ত্রকে বাঁচানোর ডাক, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার কর্মসূচি।" এর আগে, শুক্রবার নির্বাচন কমিশনে যান I.N.D.I.A জোটের প্রতিবিধিরা। কেজিরওয়ালের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী শিবিরের নেতাদের বেছে বেছে নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান তাঁরা। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলীর উল্লেখ করে স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা। নির্বাচনের আগে বিরোধীদের সমান ভাবে লড়াইয়ের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, দেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।