যাদবপুর: বঙ্গ রাজনীতিতে বরাবরের বিরাট রঙ্গমঞ্চ হয়েই থেকেছে যাদবপুর (Jadavpur)। শুধু খেলার মাঠে নয়, অঘটন যে রাজনীতির ময়দানেও ঘটে, দেখিয়ে দিয়েছে যাদবপুর। সাল ১৯৮৪। দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাম সাংসদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে গোটা দেশে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন এক লড়াকু মহিলা রাজনীতিক। পরে গোটা দেশ যাঁকে চিনেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে। কালো ঘোড়া হিসাবে নেমে কোন কেন্দ্রে অঘটন ঘটিয়েছিলেন মমতা? যাদবপুর।


সেই যাদবপুরে এবারের লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ে নেমেছিলেন ১৬ জন প্রার্থী। অনেক ভোটার তো ভোট দিতে গিয়ে ইভিএম মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে জানতে পেরেছিলেন যে, ১৬ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। কারণ, প্রার্থী যতজনই হোন না কেন, লড়াইটা ছিল মূলত ত্রিমুখী। কংগ্রেস সমর্থিত বাম প্রার্থী ছিলেন সৃজন ভট্টাচার্য। তৃণমূল কংগ্রেস এখানে প্রার্থী করেছিল অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে। আর বিজেপির প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়।


শেষ হাসি হাসলেন সায়নী। ২ লক্ষ ৫৮ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছেন তিনি। সায়নী পেয়েছেন ৭ লক্ষ ১৭ হাজার ৫২১ ভোট। বিজেপির অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় পেয়েছেন ৪ লক্ষ ৫৯ হাজার ৩৬১। তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস সমর্থিত বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য পেয়েছেন ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩৬৫ ভোট।


২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে যাদবপুর কেন্দ্রে জয়ী - সায়নী ঘোষ


দল - তৃণমূল কংগ্রেস


প্রাপ্ত ভোট - ৭ লক্ষ ১৭ হাজার ৫২১


নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী - অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় (প্রাপ্ত ভোট - ৪ লক্ষ ৫৯ হাজার ৩৬১)


তৃতীয় স্থানে - সৃজন ভট্টাচার্য (প্রাপ্ত ভোট - ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩৬৫)


২০০৯ সাল থেকে যাদবপুর কেন্দ্রে জিতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের রীতিই হল, বিদায়ী সাংসদ পরের লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পান না। প্রত্যেকবারই নামানো হয় নতুন প্রার্থী। ২০১৯ সালে যাদবপুর কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ভোটের বিশাল ব্যবধানে জিতেছিলেন তিনি। মিমির ঝড়ের সামনে বাম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী দাঁড়াতেই পারেননি। মোট ভোটের ৪৮ শতাংশ পেয়েছিলেন মিমি। যার এক তৃতীয়াংশ এসেছিল ভাঙড় থেকেই।


তবে ২ বছর পর, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে সেই ভাঙড়েই হারতে হয়েছিল রাজ্যের শাসক দলকে। আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকি জিতেছিলেন ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে সাতটি বিধানসভার মধ্যে বাকি ৬টিতেই ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার।



এবার কী হবে, তা নিয়ে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই ছিল কৌতূহল। প্রার্থী ঘোষণার আগেই সক্রিয় রাজনীতি ছেড়েছেন মিমি। অনেকে বলাবলি করেছিলেন, সম্ভবত তিনি বুঝেই গিয়েছিলেন যে, আর টিকিট পাবেন না। সায়নীকে তৃণমূল প্রার্থী করে। অন্যদিকে বাম প্রার্থী হন সৃজন। তারপর থেকেই এই কেন্দ্র নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছিল সর্বস্তরে। অবশেষে সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে গেল ৪ জুন।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।