নয়া দিল্লি : কর্ণাটকে (Karnataka) কার্যত বিশাল ব্যবধানে জিততে চলেছে দল। স্বভাবতই আবেগাপুল্ত কংগ্রেস নেতা তথা কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ডিকে শিবকুমার (DK Shivakumar)। তিনি জানান, সনিয়া গান্ধীকে কথা দিয়েছিলাম কর্ণাটকে জয় এনে দেব। রাজ্যের সব নেতাকে ধন্যবাদ।


একের পর এক রাজ্যে আধিপত্য বিজেপির। দক্ষিণ ভারতে সেঅর্থে অবশ্য ফলাফল করে দেখাতে পারেনি গেরুয়া শিবির। 'সবে ধন নীলমণি' বলতে ছিল কর্ণাটক। তা আজ হাতছাড়া হওয়ার পথে। অন্যদিকে, বড়সড় জয়ের দোরগোড়ায় কংগ্রেস। আর এর পেছনে যার বিশাল অবদান রয়েছে, তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং প্রদেশ সভাপতি শিবকুমারের। স্বাভাবিকভাবেই, কঠিন পরিস্থিতিতে দলকে জয়ের দরজায় আনতে পেরে তিনি যে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়বেন, তাতে আর বিস্ময়ের কি ! দলের সাফল্যের ছবি পরিষ্কার হতেই তিনি বললেন, 'আমি সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে-কে কথা দিয়েছিলাম, কর্ণাটকে জয় এনে দেব। আমি ভুলতে পারব না যে, সনিয়া গান্ধী আমার সঙ্গে জেলে দেখা করতে গিয়েছিলেন।'


এদিকে কর্ণাটকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন ? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়ে গেছে। অন্যতম দাবিদার অবশ্যই শিবকুমার। ৬১-র এই কংগ্রেস নেতা বলছেন, "কংগ্রেস কার্যালয়টা আমাদের কাছে মন্দির। সেখানেই আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।" গত তিন বছর ধরে তিনি ঘুমাননি বলে জানান। শিবকুমার বলেন, "আমি আমার নেত্রী সনিয়া গান্ধীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। উনি আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন। সেই থেকে আমি ঘুমাইনি। সিদ্দারামাইয়া-সহ রাজ্যের সব দলীয় নেতাকে ধন্যবাদ জানাই।" 


এদিকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। দীর্ঘদিন রাজনীতির অলিন্দে সিদ্দারামাইয়া। তাঁর বয়সও হয়েছে অনেকটা। ৭৫ বছর। ইতিমধ্যেই তিনি জানিয়ে রেখেছেন, এটাই তাঁর শেষ নির্বাচনী লড়াই। আজই তিনি আশাপ্রকাশ করে বলেন, "কংগ্রেস ১২০-র বেশি আসনে জিতবে।" এই পরিস্থিতিতে আজ সকালে দলের জয়ের ট্রেন্ড লক্ষ্য করে তাঁর বাবার কর্ণাটকের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে রেখেছেন সিদ্ধারামাইয়া পুত্র যতীন্দ্র সিদ্দারামাইয়া। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র বলেছেন, "আমরা বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে যে কোনও কিছু করতে পারি। কর্ণাটকের স্বার্থে আমার বাবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত।" তিনি আরও বলেন, "ছেলে হিসাবে আমি অবশ্যই বাবাকে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাই। কিন্তু, রাজ্যের বাসিন্দা হিসাবে, তিনি শেষবার যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন রাজ্যে সুপ্রশাসন দেখেছি। এবারও যদি তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন, বিজেপির দুর্নীতিও ও অপশাসন উনি সংশোধন করে দেবেন। তাই রাজ্যের স্বার্থে, ওঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত।"


সাম্প্রতিক এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সমীক্ষাতেও দেখা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী পদে রাজ্যের অধিকাংশ মানুষের সবথেকে সেরা পছন্দ সিদ্দারামাইয়া। ১৯৮৩ সালে প্রথমবার তিনি কর্ণাটক বিধানসভায় নির্বাচিত হন। জনতা দল সরকারের অংশ হিসাবে ১৯৯৪ সালে তিনি রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী হন। ১০ বছর পরে, ২০০৪ সালে জনতা দল(সেকুলার) সরকারের অংশ ছিলেন। যতদিন না তাঁকে দলীয় নেতা এইচ ডি দেবে গৌড়ার সঙ্গে বাদানুবাদের জেরে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়, ততদিন পর্যন্ত। এর দুই বছর পর ২০০৮ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন সিদ্দারামাইয়া। ২০১৩-র ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী হন।