বেঙ্গালুরু: প্রাক নির্বাচনী  হিসেবে কংগ্রেসকে এগিয়ে রেখেছে প্রায় সব সমীক্ষাই। কিন্তু কর্নাটকে বিজেপি (BJP) শেষ মুহুর্তে পাশা উল্টে দিতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, বিগত ৩৮ বছরে কর্নাটকে কোনও দলই একচেটিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি। বিজেপি-র কাছেও তাই এ বারের নির্বাচন অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে সুবিধাজনক জায়গা রয়েছে বিজেপি। এ ক্ষেত্রে পাঁচটি বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা (Karnataka Election Results 2023)। 


মোদি ম্যাজিক


২০১৪ সাল থেকে নির্বাচনী রাজনীতিতে বিজেপি-র প্রধান অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খোদ এবং তাঁর জনপ্রিয়তা। বিগত দু'সপ্তাহে তার ঝলকও দেখা গিয়েছে কর্নাটকে। জায়গায় সভা করেছেন তিনি, 'ডাবল ইঞ্জিন' সরকারের পক্ষে ভোট চেয়ে সরাসরি আবেদন জানিয়েছেন ভোটদানকারীদের। গত এক বছরে কর্নাটকে বিজেপি-র সংগঠন যে ভাবে লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়েছে, একা মোদিকে নামিয়েই তার অনেকটা পুনরুদ্ধার করা গিয়েছে বলে মত রাজ্য বিজেপি-র একাংশের। 


রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোটারদের প্রভাবিত করতে মোদির ভূমিকা কারও অজানা নয়। গত কয়েক দিনে শুধুমাত্র ভার্চুয়াল মাধ্যমেই প্রায় ৫৩ হাজার বুথ কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেছেন মোদি। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে কর্মীদের সরাসরি আবেদন জানিয়েছেন, তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার। তাতেই রাজ্যে বিজেপি-র প্রচারকার্য প্রাণশক্তি পেয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।


ভোট শেয়ার বনাম আসন


ভোট শেয়ার এবং আসনের মধ্যেকার ফারাক আগে বোঝা উচিত। নির্বাচনী ফলাফলের ক্ষেত্রে, বিজেপি-র ভোটের শেয়ার কখনওই কংগ্রেসের চেয়ে বেশি ছিল না। কিন্তু বিশেষ কিছু অঞ্চল এবং আসনের উপর কার্যত একচেটিয়া আধিপত্য রয়েছে বিজেপি-র।  ১৯৮৯ থেকে এই ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। আসনের নিরিখে তাই বিজেপি সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে বলে মত অনেকের। 


জাতপাতের রাজনীতি


টিকিট বিতরণের সময় থেকেই জাতপাতের সমীকরণকে এগিয়ে রেখেছে বিজেপি। লিঙ্গায়েত ভোটকে নিজেদের ঝুলিতে টানতে সংরক্ষণ বাড়ানো হয়েছে তাঁদের। একই ভাবে ভোক্কালিগাদের ক্ষেত্রেও বাড়ানো হয়েছে সংরক্ষণ। খোদ অমিত শাহ গিয়ে মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ ৪ শতাংশ সংরক্ষণ প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন, যা পরে লিঙ্গায়েত এবং ভোক্কালিগাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। 


আরও পড়ুন: Karnataka Election Results 2023 LIVE: কর্ণাটকে ৮০টি আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস এগিয়ে ১০৬টিতে


নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা


কর্নাটকে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে অমিত শাহ বার বার ছুটে গিয়েছেন প্রচারে। বেঙ্গালুরু, বেলগাভি, ওল্ড মহীশূর, গুলবার্গ, রাইচূড়, বেল্লরি, দেবনাগরি, বিজাপুর, হাভেরি, গাদাগ, কোনও জায়গাই বাদ যায়নি। নির্বাচনী ইস্তেহারে রাজ্যের মহিলদের মাসে ২০০০ টাকা ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করে কংগ্রেস দৌড়ে এগিয়ে গেলেও, অতীতের কোনও প্রতিশ্রুতিই কংগ্রেস রক্ষা করতে পারেনি বলে পাল্টা প্রচার চালিয়েছে বিজেপি। ফলে টাকার প্রতিশ্রুতিও দিতে হয়নি তাদের।


আরও পড়ুন: Karnataka Assembly Election 2023: গতবারের চেয়ে অনেকটাই কম ভোটদানের হার! মসনদে কে? জবাব ১৩মে


হিন্দুত্বের তাস


নির্বাচনের ঠিক আগে নয়, হিজাব বিতর্ক থেকেই রাজ্যে হিন্দুত্ব অস্ত্রে শান দিতে শুরু করে বিজেপি। এর পাশাপাশি, মসজিদের আজান বাজানো, মুসলিম ব্যবসায়ীদের বয়কটের ডাক, রীতিমতো কৌশলী পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে তাদের। একদিকে কংগ্রেস যেখানে বজরং দলের মতো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার ডাক দিয়েছে, বিজেপি তার পাল্টা পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়াকে নিষিদ্ধ করেছে। হোসাপেটে গিয়ে বজরংবলীকে নিয়ে আবেগ উস্কে দেন মোদি। 


তথ্যসূত্র: https://news.abplive.com/videos/news/karnataka-elections-2023-what-are-the-strategies-of-bjp-to-win-the-election-watch-video-abp-news-1600830