কেশপুর: ভোটের আগে এলাকা দখল ঘিরে রণক্ষেত্র কেশপুর । কেশপুরের বাঘরুইয়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ, ৮ জন আহত । পঞ্চায়েত ভোটের আগে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল রাজ্যজুড়ে। ভোটের আগের রাতেই প্রাণ হারালেন দু-জন। দিনভর উত্তেজনা ছড়াল মুর্শিদাবাদেও। প্রথমে রানিগড় এবং তারপর বেলডাঙা। রানিনগরে কংগ্রেস কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন অধীর চৌধুরী। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
উত্তপ্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং: ভোটের একদিন আগে উত্তপ্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং। বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থীর স্বামীকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষকৃতীদের বিরুদ্ধে। গতকাল রাতে নির্দল প্রার্থী সোনালী সিংহের স্বামী কোলাঘাট থেকে ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় কেরুর এলাকায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তপন হাজরার নেতৃত্বে তৃণমূল আশ্রিত দুষকৃতীরা হাতে লাঠি,রড,নিয়ে হামলা চালায়। এই ঘটনায় সবং থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
৩০ দিনে ১৯ জনের প্রাণহানি: পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বাংলায় ৩০ দিনে ১৯ জনের প্রাণহানি। ৯ই জুন, মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয় কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। এরপর, ১৫ই জুন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে ভাঙড়ে খুন হন আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা ও ২ তৃণমূল কর্মী রশিদ মোল্লা ও রাজু নস্কর। ওইদিনই, মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মোজাম্মেল শেখকে পিটিয়ে ও গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ১৭ জুন, কোচবিহারের দিনহাটায়, বিজেপি প্রার্থীর দেওর শম্ভু দাসকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ছুরি মেরে খুন করা হয়।
কোথায় কোথায় মৃত্যু: ওইদিনই মালদার সুজাপুরে পিটিয়ে মারা হয় তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান মোস্তাফা শেখকে। ১৫ জুন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় বাম-কংগ্রেসের মিছিলে গুলি চলে। গুলিবিদ্ধ হন ২১ বছরের সিপিএম কর্মী মনসুর আলম। ২১ জুন তাঁর মৃত্যু হয়। পরের দিন ২২ জুন, পুরুলিয়ায় রেলশহর আদ্রায় পয়েন্ট ব্ল্য়াঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূলের টাউন সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে। ২৪ জুন, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় দুষ্কৃতী আলিম বিশ্বাসের। ২৭ জুন, কোচবিহারের দিনহাটার গীতালদহে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জারি ধরলা গ্রামে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী বাবু হকের।
১ জুলাই, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ গ্রামে গুলি করে খুন করা হয় যুব তৃণমূল কর্মী জিয়ারুল মোল্লাকে। পঞ্চায়েতের টিকিট নিয়ে তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের কোন্দলে খুন বলে অভিযোগ ওঠে। ৩ জুলাই, ভোরে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার শালিপুরে বোমা বাঁধতে গিয়ে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী পরিতোষ মণ্ডলের। ৪ জুলাই, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার গাঙাটি গ্রামে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় ১৭ বছরের তৃণমূল সমর্থক ইমরান হোসেনের। আইএসএফ ও সিপিএম সমর্থিত নির্দলদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। ৫ জুলাই, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় দুষ্কৃতী কামাল শেখের।
৬ জুলাই, বীরভূমের মহম্মদবাজারে এক বিজেপি নেতাকে গুলি করে খুনের অভিযোগ। ৬ জুলাই, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে মৃত্য়ু হল আক্রান্ত কংগ্রেস নেতার। সোমবার প্রচার চলাকালীন তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ওঠে। ৭ জুলাই , মুর্শিদাবাদের রানিনগরে কংগ্রেস কর্মী অরবিন্দ মণ্ডলকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।