কলকাতা: বাংলায় নতুন পরিবর্তনের রামধনু। ব্রিগেডে জোটের মঞ্চ থেকে বার্তা দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস অধীর চৌধুরী। এদিন ব্রিগেড থেকে বিজেপি এবং তৃণমূলকে কড়া বার্তা দেন তিনি। যাঁরা বোঝাতে চাইছেন নির্বাচন হবে তৃণমূল-বিজেপি, তাঁদের যুক্তি খারিজ করে এই সভা প্রমাণ করছে সংযুক্ত মোর্চা তাদের ছাপিয়ে যাবে। তাঁর হুঁশিয়ারি আগামী দিনে টিএমসি-বিজেপি থাকবে না, সংযুক্ত মোর্চা থাকবে। অধীর বলেন, আমাদের লক্ষ্য সাম্প্রদায়িক শক্তির আগ্রাসন রুখে দেওয়া। যে ভাষায় মমতা বলেন, সেই ভাষাতেই তাঁকে বলতে চাই, তৃণমূল নেত্রী মমতা দেখে যান, মোর্চার ক্ষমতা।


 


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, প্রবাদ অনুযায়ী সকাল দেখলে বোঝা যায় দিন কেমন যাবে। আজকের সভা প্রমাণ করছে তৃণমূল-বিজেপির অপশক্তি বিদায় নেবে। সরকারের বদল এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। সংযুক্ত মোর্চার উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করা। ব্রিগেডের ময়দানে আজ পরিবর্তনের রামধনু। এদিন সমাবেশ থেকে কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় কটাক্ষ করেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের গলা টিপে হত্যা করে স্বৈরাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। একদিকে মোদি বিরোধী শূন্য ভারত চান। অন্যদিকে বাংলাতেও বিরোধী শূন্য চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের দাবি তো খুব সামান্য। রুটি, রুজি,  খাদ্য,  স্বাস্থ্য,  নিরাপত্তা। সারা ভারত তথা বাংলায় অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। অধীরের কথায়, মোদি ও দিদির মধ্যে কোনও ফারাক নেই। মোদি-দিদির বিরোধিতা করলেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের হয়।  


এদিন অধীর চৌধুরী বক্তব্য রাখার মধ্যে ব্রিগেডে ঢোকেন আব্বাস সিদ্দিকি। আর সেই সময় তাঁকে অভ্যর্থনা জানান কংগ্রেস এবং বাম নেতৃত্ব। উচ্ছাস দেখা যায় বহু মানুষের মধ্যে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব স্টেজ থেকে নেমে তাঁকে স্বাগত জানান। কিছুক্ষণ বক্তব্য বন্ধ রাখেন কংগ্রেস নেতা। আব্বাস সিদ্দিকিকে অভ্যর্থনা জানানোর পর ফের বলতে শুরু করেন অধীর চৌধুরী।


জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নিয়েও কেন্দ্র, রাজ্যকে তোপ দাগতে ছাড়েননি অধীর। তিনি বলেন, “মোদির জমানায় তেলের দাম আগুন। একদিকে কোহালি, অন্যদিকে মোদি সেঞ্চুরি হাঁকাচ্ছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ১ টাকা তেলের দাম কমিয়েছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দয়ার প্রয়োজন নেই। ছত্তীসগঢ়ে এক লিটার পেট্রোলের দাম ১২ টাকা কমানো হয়েছে। ভ্যাট কমিয়ে দিলে এমনিই কমে যাবে। বাস্তবে তেলের দাম ৩২-৩৩ টাকা, সেই তেলের দাম নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা।“


দেশ তথা বাংলার মানুষের সঙ্গে বঞ্চনা করা হয়েছে  বলে অভিযোগ তুলে সরব হন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে গরু-ছাগলের মতো ব্যবহার করেছেন মমতা। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আসা ট্রেনের নাম দিয়েছেন করোনা এক্সপ্রেস। বাম কর্মী মইদুলকে হত্যা করেছে মমতার পুলিশ। মমতা তাঁর পরিবারকে চাকরি দেওয়ার নামে নাটক করছেন। বেকার যুবকের মৃত্যু নিয়ে রসিকতা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।“