কলকাতা: ভোট লুঠ রুখতে গিয়ে যাচ্ছে প্রাণ। ভোট দেওয়ার অধিকারের জন্য যেতে হচ্ছে আদালতে। এটাই এখন এ রাজ্যের ছবি।

নিজের ভোট নিজে দিতে এবার হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা।

বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, এর থেকেই বোঝা যায়, গ্রাম বাংলায় কেমন ভোট হচ্ছে! মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকারটাই কতটা বিপন্ন! পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে, নির্ভয়ে যাতে ভোট দেওয়ার যায়, তার জন্য হাইকোর্ট পর্যন্ত ছুটতে হচ্ছে ভোটারদের।

৩০ এপ্রিল দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভোট। তার আগে, বাসন্তীর চুনাখালি গ্রামের শতাধিক বাসিন্দাদের তরফে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করা  হয়েছে। গোসাবা কেন্দ্রের এই ভোটারদের অভিযোগ, ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য গত ৩ মাস ধরে তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হয়েছে, ভোটার কার্ডও জমা দিতে।

মামলাকারীদের দাবি, এই হুমকির কথা তিনবার নির্বাচন কমিশনের কাছে জানানো হয়েছে।আর্জি জানানো হয়েছে পদক্ষেপের জন্য। কিন্তু, কমিশনর তরফে সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ।

এই প্রেক্ষাপটে, হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন চুনাখালি গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের আর্জি, মানুষের আস্থা অর্জনে গ্রামে আরও বেশি করে রুটমার্চ করুক কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুক্রবার, বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সাহিদুল্লা মুনসির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশন হলফনামা দিয়ে জানাক, চুনাখালি গ্রামের ভোটারদের আস্থা অর্জনে তারা কী কী পদক্ষেপ করেছে এবং করছে।

কিন্তু, ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন কারা? মামলাকারীরা সরাসরি কোনও দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। তা হলে কি, ভয় পেয়েই কি এ ভাবে মুখে কুলুপ?

আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুলিশ শাসকের দলদাসে পরিণত হয়েছে। সে জন্য ভয়ে কেউ শাসকের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না।

সংবিধান কার্যকর হয়েছে ১৯৫০ সালে। দেশে ভোট চালু হয়েছে ১৯৫২ সাল থেকে। আর এটা ২০১৬। অনেকেই আক্ষেপের সুরে বলছেন, সংবিধান চালু হওয়ার ৬৬ বছর পরও যদি ভোট দেওয়ার অধিকার সুনিশ্চিত করতে আদালতে যেতে হয়, তাহলে সেটা দুর্ভাগ্য এবং লজ্জা ছাড়া আর কিছুই নয়।