নয়াদিল্লি: পাকিস্তান সরকারি ভাবেই নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তাঁকে ভোট মানে পাকিস্তানকেই দেওয়া বলে অভিমত জানাল কংগ্রেস। মোদি, বিজেপি সাধারণ নির্বাচনে জিতলে ভারতের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া, কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানের সম্ভাবনা বেশি উজ্জ্বল হবে বলে তাঁর বিশ্বাস, পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে এহেন প্রতিক্রিয়া কংগ্রেসের। ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ল বলে ট্যুইট করেছেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। তিনি লিখেছেন, পাকিস্তান মোদির সঙ্গে খাতায় কলমেই সমঝোতা করেছে। মোদিকে ভোট মানে পাকিস্তানকেই ভোট! সুরজেওয়ালা কটাক্ষ করেছেন, মোদিজি, প্রথমে নওয়াজ শরিফের প্রতি প্রেম আর এখন ইমরান খান আপনার প্রিয় বন্ধু।
ইসলামাবাদের খবর, পাক প্রধানমন্ত্রী একদল বিদেশি সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বিজেপির জয়ের পক্ষে সওয়াল করে বলেছেন, কাশ্মীর সমস্যা মিটে গেলে পাল্টা দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়ার হবে বলে ভয় করতে পারে অন্য দলগুলি, সম্ভবত বিজেপি জিতলেই কাশ্মীর ইস্যুর কিছু একটা সমাধান হতে পারে। কাশ্মীরই দুটি দেশের মধ্যে কেন্দ্রীয় বিষয়।



ভারত অবশ্য বরাবর বলছে, গোটা জম্মু ও কাশ্মীর তার অবিচ্ছেদ্য অংশ, পাকিস্তানই তার অনেকটা এলাকা বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছে।
শ্রীনগরে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) সহ সভাপতি ওমর আবদুল্লার দাবি, মোদির দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন ইমরান। মোদি এর জবাব দিন! সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মোদিই এই সেদিন পর্যন্ত বলেছেন, পাকিস্তান আর সন্ত্রাসবাদীরা বিজেপির ভোটে পরাজয় চাইছে, কিন্তু আজ স্পষ্ট হয়ে গেল, পাকিস্তানই মোদির ফের জয় চায়। অন্য বিরোধী দলগুলিও ইমরানের বক্তব্য নিয়ে মোদিকে চেপে ধরতে চাইছে।
পাশাপাশি ওমর ট্যুইটেও বলেন, মোদির দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়া সমর্থন করেছেন ইমরান। মোদি সাহেব বলেছেন, শুধু পাকিস্তান, ওদের শুভানুধ্যায়ীরাই বিজেপির হার চায়। ইমরান খান কিন্তু ওনার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসা সমর্থন করছেন। দেশবাসীকে উনি বলুন, কেন?




জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আরও ট্যুইট করেছেন, কল্পনা করুন একবার, ইমরান খান রাহুল গাঁধীর ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে বললে চৌকিদার হ্যান্ডল রাহুল, কংগ্রেস সম্পর্কে কী বলত? তাহলে আসলে ‘টুকড়ে টুকড়ে’ বাহিনী কারা?



পুলওয়ামা সন্ত্রাস, বালাকোটে জঙ্গি ডেরায় ভারতীয় বায়ুসেনার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। পুলওয়ামা হামলায় জড়িত মাসুদ আজহারের জইশ-ই-মহম্মদ।
বিদেশি সাংবাদিকদের সামনে ইমরান এ নিয়ে দাবি করেন, পাকিস্তান জইশ সহ সব সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে। পাকিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ বিদেয় করার আন্তরিক চেষ্টা চলছে। জইশ সহ সব গোষ্ঠীর চালানো ধর্মীয় স্কুলগুলির নিয়ন্ত্রণ সরকার হাতে নিয়েছে। ওদের নিষ্ক্রিয় করার প্রথম সিরিয়াস পদক্ষেপ এটা। পাকিস্তানের ভবিষ্যতের স্বার্থেই এটা জরুরি বলে জানান ইমরান। আন্তর্জাতিক চাপেই পাকিস্তান এমন উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছে, এই ধারণাও খারিজ করেন তিনি।
মোদিকে নিশানা করে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, মোদির ভোটপ্রচারের একমাত্র ইস্যু পাকিস্তান। তিনি পাকিস্তানকে বিরোধীদের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন। এখন তো দেখছি, পাকিস্তান আসলে কাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়, একমাত্র ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি আইএসআইকে দেশের সামরিক ঘাঁটিতে আমন্ত্রণ করেছেন, যিনি বিনা আমন্ত্রণেই পাকিস্তান গিয়েছেন। বিদেশি রাষ্ট্রের সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নাক গলানোর চেষ্টা করছে বলে খুব উদ্বেগ আমাদের। গত বছর শোনা গিয়েছিল, আইএসআই মোদি প্রধানমন্ত্রী হোন চায়। এবার একই কথা বললেন পাক প্রধানমন্ত্রীও।