নয়াদিল্লি: রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতী, অখিলেশ যাদব কিংবা অরবিন্দ কেজরিবাল নন, এবার নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করলেন তাঁরই পূর্বসরী। ভারতীয় রাজনীতিকরা যাঁকে সময়ে অসময়ে ‘মৌনিবাবা’ বলে দাগিয়ে দিয়েছেন সেই মনমহোন সিংহ-ই এবার গর্জে উঠলেন। সম্প্রতি পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত খড়্গহস্ত হয়েছেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ৫ বছরের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মনমহোন সিংহ ব্যবহার করেছেন ‘ভয়াবহ’, ‘ধ্বংসাত্মক’-এর মতো শব্দবন্ধ। তাঁর কথায়, ভারতের কৃষক, যুবক, ব্যবসায়ী এবং সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিগত ৫ বছর ধরে চলা নরেন্দ্র মোদির সরকার ছিল সবথেকে বেশি ‘ভয়াবহ ও ধ্বংসাত্মক’।


অতীতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে বিজেপি। টুজি স্পেকট্রাম, কয়লা বণ্টন, কোলগেট সহ আরও একাধিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে মনমোহন সিংহর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা। পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে তারও জবাব দিলেন মনমোহন। প্রত্যাঘাত করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা আক্রমণ, নরেন্দ্র মোদির সরকার দুর্নীতি পরায়ণ। নোটবন্দিকে হাতিয়ার করে মনমোহন বলেন, “নোটবন্দিই দেশের সবথেকে বড় কেলেঙ্কারি”। এখানেই শেষ নয়। মোদি জমানায় দেশের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন তিনি।


পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ইদানিংকালের সম্পর্কের কথা টেনে মনমোহন সিংহ বলেন, মোদির পাকিস্তান নীতি একেবারে ‘অযত্নে সজ্জিত’ এবং ‘বিশৃঙ্খলায় ভরা’। ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামার জঙ্গি নাশকতার ঘটনা-কে ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ বলেও দাবি করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গেই নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি নিশানা করে মনমোহন সিংহ বলেন, “এটা দুঃখজনক, দেশের সেনা জওয়ানদের প্রাণ গেল, প্রধানমন্ত্রী ক্যাবিনেট বৈঠক না ডেকে জিম করবেটের জাতীয় উদ্যানে ছবি শ্যুট করলেন”।


মনমোহন সিংহ প্রত্যয়ী, এবার দেশ এই সরকারকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য মনস্থির করে ফেলেছে। তাঁর বক্তব্য, “একজন মানুষ কখনই ১৩০ কোটি মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন না। ভারত এমন একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এই সরকারকে বাইরের রাস্তা দেখিয়ে দেওয়াই উচিত”।